ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবাঞ্চিতের ব্যানারে নিজ বিভাগের শিক্ষকের নামের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ওয়াসিফ আল আবরার, ইবি

 

জুলাইয়ের গণহত্যা সমর্থন করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত এবং ক্লাস থেকে বয়কট ঘোষণা করে রাতের অন্ধকারে টানানো ব্যানারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক মিঠুন বৈরাগীর নাম দিয়ে তাকে অপমানিত ও লাঞ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেটের সামনে যেয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়।

 

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে মিঠুন স্যারের অপমান, মানিনা মানবো না; মিঠুন স্যার লাঞ্চিত কেন, জবাব চাই জবাব চাই; Stand with Mithun Sir ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসময় তারা জেগেছে রে জেগেছে, ইবিয়ানরা জেগেছে; আমার স্যার তোমার স্যার, মিঠুন স্যার মিঠুন স্যার; মিঠুন স্যারের অপমান, মানি না মানবো না স্লোগান দিতে থাকেন।

 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনের সময়ে মিথুন স্যার আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছিলেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা জানতে খোজখবর নিয়েছিলেন। আমি যখন কুষ্টিয়াতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম তখন আমাদের ফোন দিয়ে মেডিকেল-খাওয়া দাওয়া সহ বিভিন্নভাবে সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকার কারণে সরাসরি আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে না পারলেও তিনি সবসময় আমাদেরকে সাহস জুগিয়েছেন। যারা বিভিন্নভাবে স্যারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি একইসাথে যারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ছিল তাদেরও সামনে আনার দাবি জানাই।

 

অপর শিক্ষার্থী জুয়েল বলেন, আন্দোলনের একদম শুরুতে জুলাইয়ের ৬ তারিখেই স্যার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে আমাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও আমরা যখন রাতে পুলিশের রেডের কারণে মেসে ঘুমাতে পারতাম না, তখনো স্যার গভীর রাতে বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে আমাদের খবর নিতেন। আমরা ছাত্রলীগ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরে স্যার বলেছেন যেকোন সমস্যায় তাকে জানাতে তিনি আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। এমন শিক্ষার্থীবান্ধব একজন শিক্ষকের এ ধরনের অপমান আমার কোনভাবেই মেনে নিব না। যে সকল শিক্ষক প্রকৃত দোষী, তাদের শাস্তির দাবী জানাই।

এ ব্যাপারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মিঠুন বৈরাগী বলেন, আমি সকালে ঘুম থেকে ওঠে আমার নাম-ছবি দেখে হতবাক হলাম। শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর রাখতাম, তাদের সহযোগিতা করতাম। যেহেতু প্রশাসন নাই আমি কার কাছে গিয়ে বলবো। পাশে ছিলাম বলেই শিক্ষার্থীরা আমার পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ করলো। তবে যে বা যারা এরকম কাজ করলো তাদের যেন একটু হলেও উপলব্ধি হয় সেটাই চাওয়া।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৯৩ বার পড়া হয়েছে

অবাঞ্চিতের ব্যানারে নিজ বিভাগের শিক্ষকের নামের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ১১:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

জুলাইয়ের গণহত্যা সমর্থন করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত এবং ক্লাস থেকে বয়কট ঘোষণা করে রাতের অন্ধকারে টানানো ব্যানারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক মিঠুন বৈরাগীর নাম দিয়ে তাকে অপমানিত ও লাঞ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেটের সামনে যেয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়।

 

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে মিঠুন স্যারের অপমান, মানিনা মানবো না; মিঠুন স্যার লাঞ্চিত কেন, জবাব চাই জবাব চাই; Stand with Mithun Sir ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসময় তারা জেগেছে রে জেগেছে, ইবিয়ানরা জেগেছে; আমার স্যার তোমার স্যার, মিঠুন স্যার মিঠুন স্যার; মিঠুন স্যারের অপমান, মানি না মানবো না স্লোগান দিতে থাকেন।

 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনের সময়ে মিথুন স্যার আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছিলেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা জানতে খোজখবর নিয়েছিলেন। আমি যখন কুষ্টিয়াতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম তখন আমাদের ফোন দিয়ে মেডিকেল-খাওয়া দাওয়া সহ বিভিন্নভাবে সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকার কারণে সরাসরি আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে না পারলেও তিনি সবসময় আমাদেরকে সাহস জুগিয়েছেন। যারা বিভিন্নভাবে স্যারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি একইসাথে যারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ছিল তাদেরও সামনে আনার দাবি জানাই।

 

অপর শিক্ষার্থী জুয়েল বলেন, আন্দোলনের একদম শুরুতে জুলাইয়ের ৬ তারিখেই স্যার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে আমাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও আমরা যখন রাতে পুলিশের রেডের কারণে মেসে ঘুমাতে পারতাম না, তখনো স্যার গভীর রাতে বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে আমাদের খবর নিতেন। আমরা ছাত্রলীগ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরে স্যার বলেছেন যেকোন সমস্যায় তাকে জানাতে তিনি আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। এমন শিক্ষার্থীবান্ধব একজন শিক্ষকের এ ধরনের অপমান আমার কোনভাবেই মেনে নিব না। যে সকল শিক্ষক প্রকৃত দোষী, তাদের শাস্তির দাবী জানাই।

এ ব্যাপারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মিঠুন বৈরাগী বলেন, আমি সকালে ঘুম থেকে ওঠে আমার নাম-ছবি দেখে হতবাক হলাম। শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর রাখতাম, তাদের সহযোগিতা করতাম। যেহেতু প্রশাসন নাই আমি কার কাছে গিয়ে বলবো। পাশে ছিলাম বলেই শিক্ষার্থীরা আমার পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ করলো। তবে যে বা যারা এরকম কাজ করলো তাদের যেন একটু হলেও উপলব্ধি হয় সেটাই চাওয়া।