ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইজরাইলে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজধানীতে বিক্ষোভ

ইমান আলী,  ঢাকা

 

২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে, দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেন ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশ।

 

উক্ত সংহতি সমাবেশটি শুরু হয় শুক্রবার দুপুর ২ টা ৩০ থেকে।উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সহ সংগঠনটির আরো অন্যান্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দের বক্তব্য দান কালে বলেন, গত সাত অক্টোবর থেকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার উপর একের পর এক বিমান হামলা এবং ড্রোনহামলা সহ আরো নানা কৌশলে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার এক গভীর পরিকল্পনা করে আসছে।

ইতিমধ্যেই তারা ফিলিস্তিনের হাসপাতাল সহ আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে । দখলদার ইসরাইলি বাহিনী অযাচিত হামলা করে তারা মানবতা লঙ্ঘন করেছে । এমতাবস্থায় জাতিসংঘের কাছে আমাদের দাবি ফিলিস্তিনি মুসলমানদেরকে স্বাধীন জন্মভূমি উপহার দিতে হবে এবং দখলদার ইসরাইলি বাহিনীদের মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তাদের বক্তব্যের মাঝে আরো বিস্তারিত তুলে তরে বলেন,
গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। সারা বিশ্বের মানবতাবাদী, সংবেদনশীল মানুষের নিন্দা ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করছে ফিলিস্তিনের নারী-শিশুসহ নিরপরাধ মানুষদের। ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক। এর মধ্যে ৮ হাজারের বেশি শিশু। আহত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।

ইসরায়েলি বাহিনীর দানবীয় হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শরণার্থী শিবির, ধর্মীয় উপাসনালয়, সরকারি ভবন ও সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি। অবরুদ্ধ গাজায় পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে এবং মানবিক সাহায্য প্রেরণে বাধা সৃষ্টি করে লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে ওঠছে।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থনপুষ্ট হয়ে যুদ্ধবাজ ইসরায়েল ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে। নিজস্ব ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে অবৈধ ইহুদি-বসতি স্থাপন করছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলাকে অজুহাত করে তারা গাজায় নতুন করে ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করেছে। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের নিজস্ব আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করে সমগ্র গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়াই ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর গণহত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। দেশে দেশে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। সারা বিশ্বের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষ ফিলিস্তিনবাসীর স্বাধীন আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করছে। আমরাও বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্ববিবেকের সাথে একাত্ম হয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ও সংহতি ঘোষণা করছি। আসুন, সমবেত কণ্ঠে আওয়াজ তুলি- ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ কর, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কর। বিশ্বের সকল প্রান্তে, সকল দেশে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ও ফ্যাসিবাদী অপশক্তি নিপাত যাক। এসব কথা বলে বক্তব্যর ইতি টানেন।

শাহবাগ চত্বরে সংহতি সমাবেশ শেষে সেখান থেকে শুরু হয় এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল । মিছিলটি শাহবাগ চত্বর থেকে শুরু হয়ে কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্সল্যাব, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত ,এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:১০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
১৮৫ বার পড়া হয়েছে

ইজরাইলে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজধানীতে বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৪:১০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

 

২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে, দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেন ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশ।

 

উক্ত সংহতি সমাবেশটি শুরু হয় শুক্রবার দুপুর ২ টা ৩০ থেকে।উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সহ সংগঠনটির আরো অন্যান্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দের বক্তব্য দান কালে বলেন, গত সাত অক্টোবর থেকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনতার উপর একের পর এক বিমান হামলা এবং ড্রোনহামলা সহ আরো নানা কৌশলে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার এক গভীর পরিকল্পনা করে আসছে।

ইতিমধ্যেই তারা ফিলিস্তিনের হাসপাতাল সহ আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে । দখলদার ইসরাইলি বাহিনী অযাচিত হামলা করে তারা মানবতা লঙ্ঘন করেছে । এমতাবস্থায় জাতিসংঘের কাছে আমাদের দাবি ফিলিস্তিনি মুসলমানদেরকে স্বাধীন জন্মভূমি উপহার দিতে হবে এবং দখলদার ইসরাইলি বাহিনীদের মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তাদের বক্তব্যের মাঝে আরো বিস্তারিত তুলে তরে বলেন,
গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। সারা বিশ্বের মানবতাবাদী, সংবেদনশীল মানুষের নিন্দা ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করছে ফিলিস্তিনের নারী-শিশুসহ নিরপরাধ মানুষদের। ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক। এর মধ্যে ৮ হাজারের বেশি শিশু। আহত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।

ইসরায়েলি বাহিনীর দানবীয় হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শরণার্থী শিবির, ধর্মীয় উপাসনালয়, সরকারি ভবন ও সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি। অবরুদ্ধ গাজায় পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে এবং মানবিক সাহায্য প্রেরণে বাধা সৃষ্টি করে লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে ওঠছে।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থনপুষ্ট হয়ে যুদ্ধবাজ ইসরায়েল ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে। নিজস্ব ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে অবৈধ ইহুদি-বসতি স্থাপন করছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলাকে অজুহাত করে তারা গাজায় নতুন করে ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করেছে। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের নিজস্ব আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করে সমগ্র গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়াই ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর গণহত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। দেশে দেশে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। সারা বিশ্বের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষ ফিলিস্তিনবাসীর স্বাধীন আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করছে। আমরাও বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্ববিবেকের সাথে একাত্ম হয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ও সংহতি ঘোষণা করছি। আসুন, সমবেত কণ্ঠে আওয়াজ তুলি- ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ কর, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কর। বিশ্বের সকল প্রান্তে, সকল দেশে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ও ফ্যাসিবাদী অপশক্তি নিপাত যাক। এসব কথা বলে বক্তব্যর ইতি টানেন।

শাহবাগ চত্বরে সংহতি সমাবেশ শেষে সেখান থেকে শুরু হয় এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল । মিছিলটি শাহবাগ চত্বর থেকে শুরু হয়ে কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্সল্যাব, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত ,এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত ঘোষণা করেন।