ইবিতে বেতন বৃদ্ধির দাবীতে ট্রেজারারের কার্যালয় ঘেরাও
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত দৈনিক মজুরি ভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা যাবত কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সঙ্গে সাক্ষাতের পর উপাচার্য পরবর্তী সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। তবে দাবি মানা না হলে ঈদের পর আবারো আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবি, ২০২০ সালের অক্টোবরে অর্থ মন্ত্রণালয় ন্যূনতম ৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দেয়। তবে সেই নিয়মকে তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে নামমাত্র বেতন দিচ্ছে। বিধিতে উল্লেখিত জেলা ও উপজেলা এলাকায় শ্রমিকদের ধরন অনুযায়ী, সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বেতন নির্ধারিত থাকলেও কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক ৫০০ বা তারও বেশি টাকা দেওয়া হয়।
অবস্থানরত কর্মচারীরা জানান, সাড়ে তিন বছর ধরে তারা সরকার নির্ধারিত মজুরির পরিবর্তে ১৫০ টাকা পেয়ে আসছেন। বিগত প্রশাসন ৪০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করলে কেউ মাসে ৪০০০/৫০০০ টাকা পাচ্ছেন। বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশাসনের শরনাপন্ন হলেই তারা বলে পরবর্তী সিন্ডিকেটে কথা বলবে কিন্তু বেতন বৃদ্ধির কার্যকরী কোন উদ্যোগ এ প্রশাসন নেয়নি। অন্যান্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই এতো কম টাকায় কাজ করার নজির নেই। যে টাকা দেয় তাতে সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
অস্থায়ী কর্মচারী বাদশাহ মিয়া বলেন, আমরা অস্থায়ী কর্মচারী আছি ৬২ জন। প্রায় ৩০০ স্থায়ী কর্মচারী রিটায়ার্ড নিয়েছে যাদের কাজ এখন আমরা করি। তাই প্রশাসনের নিকট আমাদের একটাই দাবি আমাদের বেতন বৃদ্ধি করুন। অন্যথায় ঈদের পর আমরা লাগাতার আন্দোলনের পাশাপাশি আমরণ অনশনের দিকে অগ্রসর হবো।
খোজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে ৫৭ জন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত আছেন। তাদের প্রতি মাসে পারিশ্রমিক সর্বোচ্চ ১০,০০০ এবং সর্বনিম্ন ৪২০০ টাকা। থোক ভিত্তিতে নিয়োজিতদের মাসিক টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে গত বছরের ৪ এপ্রিল কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যদের কমিটি করেন উপাচার্য। তবে প্রায় এক বছর পরেও এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি সেই তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ছয় মাস আগে দুইটি মিটিং হয়েছিল। সেখানে তাদের ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বেতন দেওয়া হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটা একপ্রকার চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকেই ছিল। পরে আর বিষয়টি আর আগায়নি। তবে আহ্বায়ক আবার ডাকলে আমরা বসবো।
এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়া বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিষয় না। স্ব স্ব দপ্তর তাদের দেখে। তারপরও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবে।