কাউন্সিলের প্রভাবে এলাকার ৭টি স্থানে অবৈধভাবে গরুর হাট
সিদ্ধিরগঞ্জ ১ নম্বর ওয়ার্ড সি,আইখোলা এলাকায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে অস্থায়ী পশুর হাট।
ডিএনডি লেক খালের সৌন্দর্য বর্ধনে লাগানো গাছ বিনষ্ট ও জনদুর্ভোগ লাগবে এখানে হাট না বসানোর জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
তবু হাট বসানো থেকে বিরত হচ্ছেন না স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম। এতে এলাকায় চলছে সমালোচনা।
স্থানীয় বাসিন্দা বারেক মিয়া, জানান, সি,আইখোলা এলাকায় ডিএনডি লেক খালের পাড় ও সড়ককে বালুর মাঠ উল্লেখ করে পশুর হাটের ইজারা নিয়েছেন নাসিক ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলামের ভাগিনা মো. সালাম। হাটটির ইজারাদার মো. সালাম হলেও মূলে রয়েছেন কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকে মো. সালামের নামে কোরবানির পশুর হাটের জন্য সি,আইখোলা বালুর মাঠ ইজারা এনছেন। তবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম।
বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের টিশার্টেও দেখা যায় তার প্রতিচ্ছবি। যিনি তার ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে সিআইখোলা আবাসিক এলাকার ৪টি স্থান দখল করে মোট ৭টি স্থানে এখন অবৈধভাবে গরুর হাট বসিয়েছেন। যেখানে শতকোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের অধীনে ডিএনডি খালের পশ্চিম পাড়ে ৩০ ফুট প্রস্থে জমিতে গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়াও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও লাইট পোস্ট স্থাপন করে খালের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের স্থানে লাগানো গাছ কেটে ৫, ৬ ও ৭নং মাঠ চিহিৃত করে গরুর হাট বসানো হয়েছে। গাছ কেটে ও পাড়ের সৌন্দর্য নষ্ট করে হাট বাসনোর কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি এলাকাবাসী দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত। এছাড়াও খালের পানিতে দেয়া হয়েছে সোচাগার। ফলে দূষিত হচ্ছে পানিও সেখানকার পরিবেশ। এখানেই শেষ নয়, তিতাস গ্যসের রাইজার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিকের পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ নিয়ে তা রান্নার কাজে ব্যবহার করছে গরুর বেপারীরা। যা কোনভাবেই ঠিক নয়। রয়েছে বড় দূর্ঘটনারও শংকা।
একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এ কাউন্সিলর সড়ক দখল করে পশুর হাট বসিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন। তাই এখানে হাট বসানোর অনুমতি না দিতে এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে গত ৬ জুন সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নিরব থাকায় কাউন্সিলরের লোকজন হাট বসানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। ইতোমধ্যে হাটে বহু গরু আনা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মিত আরসিসি ঢালাই করা জনবহুল সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে বাঁশের খুঁটি লাগিয়ে দখল করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডিএনডি লেক খালের পাড়ে সৌন্দর্য বর্ধনে লাগানো কিছু গাছ কেটে বাঁশের ভেড়া দিয়ে হাটে রূপান্তরিত করেছেন। সড়কের উপর বেঁধে রাখা হয়েছে বহু গরু। ফলে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন ও জনচলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
পথচারী আসাদুল বলেন, এমন জনবহুল সড়ক দখল করে গরুর হাট বসানোর ইজারা সিটি করপোরেশন কি করে দিয়েছেন।
এসড়কটি দিয়ে আদজমী ইপিজেডের হাজার হাজার শ্রমিক চলাচল করে। যখন হাটটি জমে উঠবে তখন এসড়ক দিয়ে কোন যাবাহন বা পথচারী চলাচল করা সম্ভব হবে না। ফলে প্রায় চারদিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি অচল থাকবে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে এলাকার বাসিন্দাদের।
রাস্তা দখল করে পশুর হাট বসানো হয়েছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নিয়েই হাট বসানো হয়েছে। তবে জনদুর্ভোগ যেন না হয় সেদিকে আমার নজর রয়েছে।