কোটার পক্ষে-বিপক্ষে মাঠে ইবি শিক্ষার্থীরা
সরকারী চাকুরিতে কোটা সংস্কার ও আদালত কর্তৃক ২০১৮ সালে জারিকৃত পরিপত্র বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের ব্যনারে এই কর্মসূচি পালন করে তারা। এদিকে, সরকারি চাকরিতে ৩০% কোটা বহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে কর্মসূচি পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১১ টায় কোটা বাতিলের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ডায়না চত্বর থেকে মিছিল বের হয়ে প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ ও ছাত্র সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, কোটা পদ্ধতি নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক,জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে; লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, একটি দেশে যখন ৩০ শতাংশ কোটার মাধ্যমে অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা হবে তখন একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। ৩০ শতাংশ কোটার ফলে অযোগ্য বা যোগ্যতায় পিছিয়ে পড়া মানুষ চাকরি পাবে ফলে মেধাবীরা বৈষম্যের শিকার হবে। বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থার কবল থেকে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসেও আমরা এখন নব্য এক বৈষম্যবস্থা দেখতে পাচ্ছি।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার সহ দায়িত্বশীল সকলকে বলতে চাই আপনারা অনুগ্রহ করে ২০১৮ সালের মতো তড়িঘড়ি করবেন না। বাংলাদেশে ছাত্র সমাজ, গুণীজন, বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের সাথে সমন্বয় করে কোটা ব্যবস্থার একটি সুষ্ঠু সমাধান বের করবেন। যদি আপনারা ব্যর্থ হন তাইলে দেশের জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা হারাবে এবং বাংলাদেশের আপামর ছাত্র সমাজ ১৯৫২ ও ১৯৭১ এর ন্যায় গণজাগরণের ডাক দিবে।
এদিকে, সরকারি চাকরিতে ৩০% কোটা বহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে কর্মসূচি পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি মেজবাহুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির খান, সহ-সভাপতি আবদিম মুনিব ও মাহমুদুল হাসান, মীম জাহানসহ অন্যান্যরা।
বক্তারা বলেন, আমরা কখনই আমাদের বাবা এবং দাদা যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের অবদানকে অস্বীকার এবং তাদেরকে অবমাননা ও কটুক্তি মেনে নিব না। যারা পাকিস্তানের দোসর, যাদের শরীরে বইছে রাজাকার, পাকিস্তানদের রক্ত, তারাই মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নিয়ে ট্রল করতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে মেজবাহুল ইসলাম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিপক্ষেই আন্দোলন করছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্মদের তারা অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখতে চায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হবে সকল কোটার বিরুদ্ধে। তারা শুধুই মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারে না। একটি পক্ষের উষ্কানিতে তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে।