ঢাকা ০২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জ-১:নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রচারণা শেষ হলো

মাইনুল ইসলাম রাজু , গোপালগঞ্জ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল (৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জ-১ (কাশিয়ানী-মুকসুদপুর) আসনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নানান কর্মসূচি ও জনসভা আয়োজিত হয়। ফারুক খান (নৌকা) ও কাবির মিয়া (ঈগল) উভয় প্রার্থীই বিভিন্ন কর্মসূচির পালন করেন। তবে কিছু কিছু জায়গায় উত্তেজনা হতেও দেখা গেছে।

গতকাল মুকসুদপুর পাইলট স্কুলে একই সময়ে উভয় প্রার্থী জনসভা ঘোষনা করলে উক্ত স্থানে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক।

নৌকা প্রার্থীর কর্মসূচি:

গতকাল আসনটির বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটি নানান কর্মসূচি ঘোষনা করেছিল। এই কর্মসূচিতে দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গ্রাম থেকে জনসাধারণ ছোট ছোট মিছিল করে নির্দিষ্ট জায়গায় জমায়েত হয়ে ইউনিয়ন কমিটির নেতৃত্বে ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন। প্রতিটি মিছিলেই ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায়। আসনের মুকসুদপুর বাজার ও খান্দারপাড়াসহ বেশ কয়েকটি জনসভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক খান। জনসাধারণ বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন ওয়ার্ডের যে নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের গনজোয়ার তা আজ জন সমুদ্রে পরিণত।  এই জনসমুদ্র প্রমান করে নৌকার জয় সুনিশ্চিত। এই জনসমুদ্র প্রমান করে জাতির পিতার পুন্যভুমিতে অন্য কোন শক্তির কোন স্থান নেই।

ঈগল প্রার্থীর কর্মসূচি:

বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, গতকাল আসনটির  কাশিয়ানী রেলওয়ে স্টেশন মাঠে সকাল ১০.৩০,  সরকারি মুকসুদপুর কলেজ মাঠে দুপুর ৩ টা এবং গোবিন্দপুর স্কুল মাঠে বিকাল ৪ টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার তিনটি জনসভা দেখা যায়। জনসভায় যোগ দেন আশেপাশের এলাকার জনসাধারণ। বিপুল জনসমাগম দেখা যায় কর্মসূচি গুলোতে। স্বতন্ত্র সমর্থক এলাকাবাসী বলেন, ‘আমরা আজ যেভাবে কাবির ভাইয়ের জনসভায় যোগ দিয়েছি ৭ তারিখে ঠিক এইভাবেই ভোট দিয়ে তাকেই জয়ী করব।’

দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও মুখোমুখি অবস্থান:

শেষ দিনের জনসংযোগ ও সভাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি জায়গায় সংঘাত দেখা গিয়েছে। গতকাল মুকসুদপুর পাইলট স্কুলের জনসভার আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার জনসভার স্থান সরকারি মুকসুদপুর কলেজে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু উক্ত স্থান সকাল থেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ছাত্রলীগের দখলে ছিল। বিকালে কাবির মিয়ার সমর্থকেরা ভীড় জমাতে শুরু করলে তাদের সাথে ছাত্রলীগ ও ফারুক খানের সমর্থক এর বাকবিতণ্ডা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ দেখা যায়। এসময় একটি গাড়ি ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের দৃশ্য দেখা যায়। আসনের বহুগ্রাম ইউনিয়নের একজন বলেন, আমার দুই ভাই মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যাক্তিগত কাজে মুকসুদপুর যায়। অবস্থা খারাপ দেখে তারা দূরে চলে আসে এবং মোটরসাইকেল রেখে নাস্তা করতেছিল তখন একদল লোক তাদের গাড়ি দুটি ভেঙে ফেলে। এসময় পুলিশ মুকসুদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি উজ্জলকে আটক করেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, আসনের রাজপাট জনসভা ও কাশিয়ানী জনসভায় দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান দেখা গিয়েছে।

অন্যান্য প্রার্থী ও তাদের কর্মসূচি:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাই আসনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার মাঝে হলেও এখানে আরো বেশ কয়েকজন বৈধ প্রার্থী রয়েছে। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন, তৃণমূল বিএনপি থেকে লড়ছেন জাহিদুল ইসলাম, এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে শেখ আব্দুল্লাহ। যদিও তাদের কোন প্রচার-প্রচারণা দেখা যায়নি। এমনকি বেশিরভাগ জনগণ এই প্রার্থীর নামও জানেননা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:৩১:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪
১৯১ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জ-১:নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রচারণা শেষ হলো

আপডেট সময় ১১:৩১:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল (৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জ-১ (কাশিয়ানী-মুকসুদপুর) আসনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নানান কর্মসূচি ও জনসভা আয়োজিত হয়। ফারুক খান (নৌকা) ও কাবির মিয়া (ঈগল) উভয় প্রার্থীই বিভিন্ন কর্মসূচির পালন করেন। তবে কিছু কিছু জায়গায় উত্তেজনা হতেও দেখা গেছে।

গতকাল মুকসুদপুর পাইলট স্কুলে একই সময়ে উভয় প্রার্থী জনসভা ঘোষনা করলে উক্ত স্থানে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক।

নৌকা প্রার্থীর কর্মসূচি:

গতকাল আসনটির বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটি নানান কর্মসূচি ঘোষনা করেছিল। এই কর্মসূচিতে দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গ্রাম থেকে জনসাধারণ ছোট ছোট মিছিল করে নির্দিষ্ট জায়গায় জমায়েত হয়ে ইউনিয়ন কমিটির নেতৃত্বে ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন। প্রতিটি মিছিলেই ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায়। আসনের মুকসুদপুর বাজার ও খান্দারপাড়াসহ বেশ কয়েকটি জনসভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক খান। জনসাধারণ বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন ওয়ার্ডের যে নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের গনজোয়ার তা আজ জন সমুদ্রে পরিণত।  এই জনসমুদ্র প্রমান করে নৌকার জয় সুনিশ্চিত। এই জনসমুদ্র প্রমান করে জাতির পিতার পুন্যভুমিতে অন্য কোন শক্তির কোন স্থান নেই।

ঈগল প্রার্থীর কর্মসূচি:

বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, গতকাল আসনটির  কাশিয়ানী রেলওয়ে স্টেশন মাঠে সকাল ১০.৩০,  সরকারি মুকসুদপুর কলেজ মাঠে দুপুর ৩ টা এবং গোবিন্দপুর স্কুল মাঠে বিকাল ৪ টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার তিনটি জনসভা দেখা যায়। জনসভায় যোগ দেন আশেপাশের এলাকার জনসাধারণ। বিপুল জনসমাগম দেখা যায় কর্মসূচি গুলোতে। স্বতন্ত্র সমর্থক এলাকাবাসী বলেন, ‘আমরা আজ যেভাবে কাবির ভাইয়ের জনসভায় যোগ দিয়েছি ৭ তারিখে ঠিক এইভাবেই ভোট দিয়ে তাকেই জয়ী করব।’

দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও মুখোমুখি অবস্থান:

শেষ দিনের জনসংযোগ ও সভাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি জায়গায় সংঘাত দেখা গিয়েছে। গতকাল মুকসুদপুর পাইলট স্কুলের জনসভার আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার জনসভার স্থান সরকারি মুকসুদপুর কলেজে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু উক্ত স্থান সকাল থেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ছাত্রলীগের দখলে ছিল। বিকালে কাবির মিয়ার সমর্থকেরা ভীড় জমাতে শুরু করলে তাদের সাথে ছাত্রলীগ ও ফারুক খানের সমর্থক এর বাকবিতণ্ডা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ দেখা যায়। এসময় একটি গাড়ি ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের দৃশ্য দেখা যায়। আসনের বহুগ্রাম ইউনিয়নের একজন বলেন, আমার দুই ভাই মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যাক্তিগত কাজে মুকসুদপুর যায়। অবস্থা খারাপ দেখে তারা দূরে চলে আসে এবং মোটরসাইকেল রেখে নাস্তা করতেছিল তখন একদল লোক তাদের গাড়ি দুটি ভেঙে ফেলে। এসময় পুলিশ মুকসুদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি উজ্জলকে আটক করেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, আসনের রাজপাট জনসভা ও কাশিয়ানী জনসভায় দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান দেখা গিয়েছে।

অন্যান্য প্রার্থী ও তাদের কর্মসূচি:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাই আসনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার মাঝে হলেও এখানে আরো বেশ কয়েকজন বৈধ প্রার্থী রয়েছে। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন, তৃণমূল বিএনপি থেকে লড়ছেন জাহিদুল ইসলাম, এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে শেখ আব্দুল্লাহ। যদিও তাদের কোন প্রচার-প্রচারণা দেখা যায়নি। এমনকি বেশিরভাগ জনগণ এই প্রার্থীর নামও জানেননা।