ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় শীতে ও গ্রীষ্মে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, কিন্তু কেন?

মামুনর রশীদ রাজু, ব্যুরো চীফ, খুলনা

চুয়াডাঙ্গায় শীতে সর্বনিম্ন, আর গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডের কারণ- কর্কটক্রান্তি রেখায় অবস্থান ছাড়াও জলাশয়ের স্বল্পতা, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, অনাবৃষ্টি ও পশ্চিম দিক থেকে আসা লু হাওয়ায় চরমভাবাপন্ন হয়ে ওঠা।

 

বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়া, যেখানে র‍য়েছে বাংলাদেশও। রাজধানীসহ গোটা দেশ যখন তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে তখন নতুন ভিন্ন এক মাত্রা নিয়ে সামনে এসেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা।

 

সৌদি আরব ও আফ্রিকার মরু অঞ্চলের সমান্তরালের এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে গেছে কর্কটক্রান্তি রেখা। সূর্য এখানে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত মাথার ওপর থাকে।

 

এপ্রিলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর ও মধ্য প্রদেশ থেকে যে শুষ্ক বাতাস বয়ে আসে, সেই উত্তপ্ত বায়ু চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা এবং মংলা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর উত্তপ্ত বায়ু প্রবেশে মুখোমুখি অবস্থানে থাকে চুয়াডাঙ্গা। এবং এমন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা একটু বেশি মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

 

পরিবেশবিদেরা বলছেন, সাতক্ষীরা-যশোর ছাড়াও এই বলয়ে পড়ে ফরিদপুর-কুষ্টিয়া। তবে সেখানে জলাধার কাছে থাকায় তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা সহনীয় থাকে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা, নবগঙ্গাসহ শাখা নদীগুলো শুকিয়ে গেছে। নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। একই সঙ্গে বনভূমি কমে যাওয়া ও অনাবৃষ্টিতে আবহাওয়া এমন চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠছে।

 

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, পানি যত বেশি প্রবাহমান সে তত বেশি হিট ডিসচার্জ করে। পানিপ্রবাহ হিট ডিসচার্জ করে তাপমাত্রাকে নিচের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু ভরাটের মাধ্যমে এটাকে যখন বন্ধ করে ফেলা হলো তখন এই মেকানিজম তো আর থাকছে না। এর ফলে ভূমি তাপমাত্রাকে অ্যাবজর্ভ করে আবার তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

 

এক দশক আগেও নাটোরের লালপুর ছিল দেশের সবচেয়ে উষ্ণতম এলাকা। জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও মানবসৃষ্ট সংকটে সে জায়গা নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা। ২০১৪ সালের ২১ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি। গত বছরের ১৭ এপ্রিলেও তা ছিল ৪৩ ডিগ্রি। এবারও সেই একই অবস্থা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:৫৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
১৩৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় শীতে ও গ্রীষ্মে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, কিন্তু কেন?

আপডেট সময় ১২:৫৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় শীতে সর্বনিম্ন, আর গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডের কারণ- কর্কটক্রান্তি রেখায় অবস্থান ছাড়াও জলাশয়ের স্বল্পতা, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, অনাবৃষ্টি ও পশ্চিম দিক থেকে আসা লু হাওয়ায় চরমভাবাপন্ন হয়ে ওঠা।

 

বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়া, যেখানে র‍য়েছে বাংলাদেশও। রাজধানীসহ গোটা দেশ যখন তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে তখন নতুন ভিন্ন এক মাত্রা নিয়ে সামনে এসেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা।

 

সৌদি আরব ও আফ্রিকার মরু অঞ্চলের সমান্তরালের এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে গেছে কর্কটক্রান্তি রেখা। সূর্য এখানে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত মাথার ওপর থাকে।

 

এপ্রিলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর ও মধ্য প্রদেশ থেকে যে শুষ্ক বাতাস বয়ে আসে, সেই উত্তপ্ত বায়ু চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা এবং মংলা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর উত্তপ্ত বায়ু প্রবেশে মুখোমুখি অবস্থানে থাকে চুয়াডাঙ্গা। এবং এমন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা একটু বেশি মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

 

পরিবেশবিদেরা বলছেন, সাতক্ষীরা-যশোর ছাড়াও এই বলয়ে পড়ে ফরিদপুর-কুষ্টিয়া। তবে সেখানে জলাধার কাছে থাকায় তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা সহনীয় থাকে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা, নবগঙ্গাসহ শাখা নদীগুলো শুকিয়ে গেছে। নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। একই সঙ্গে বনভূমি কমে যাওয়া ও অনাবৃষ্টিতে আবহাওয়া এমন চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠছে।

 

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, পানি যত বেশি প্রবাহমান সে তত বেশি হিট ডিসচার্জ করে। পানিপ্রবাহ হিট ডিসচার্জ করে তাপমাত্রাকে নিচের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু ভরাটের মাধ্যমে এটাকে যখন বন্ধ করে ফেলা হলো তখন এই মেকানিজম তো আর থাকছে না। এর ফলে ভূমি তাপমাত্রাকে অ্যাবজর্ভ করে আবার তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

 

এক দশক আগেও নাটোরের লালপুর ছিল দেশের সবচেয়ে উষ্ণতম এলাকা। জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও মানবসৃষ্ট সংকটে সে জায়গা নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা। ২০১৪ সালের ২১ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি। গত বছরের ১৭ এপ্রিলেও তা ছিল ৪৩ ডিগ্রি। এবারও সেই একই অবস্থা।