ঢাকা ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ চাই-শরিফুল ইসলাম রিয়াদ

হাসান আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ

ফেব্রুয়ারী জাতীয় মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মুল্যবান আলোচনা ইসলামী ছাত্রলীগ বাংলাদেশ সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন
আফসোস!
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। ইতিহাসে এমন সাহসি জাতি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যারা রক্ত ও জীবন দিয়ে ভাষার অধিকার আদায় করেছে। এ ভাষা আন্দোলন-ই আমাদের স্বাধীনতার সিঁড়ি ছিল।

কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতির একটা মন্দ দিক হলো- রাজনীতিকরা যে সিঁড়িটিকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন, ক্ষমতায় বসার পর সেই সিঁড়িটিকে উপেক্ষা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষার অবস্থায় এখন প্রায় সেরকম।

বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সত্ত্বেও নিজের দেশেই বাংলাভাষার এখনও দুয়োরানীর অবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্ম, উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা, বিচারকদের রায়, [To-Let,Road Number, Name plate House Number ]- এর মত শব্দের বিচারহীন ব্যবহার- বাংলা ভাষার হাহাকার-ই প্রমাণ করে।

দেখেন- রাষ্ট্র ও আমরা বিনা সংকোচে সাম্রা / জ্যবা/ দীদের চাপিয়ে দেওয়া ভাষাকে সহজ ও বীরত্বব্যঞ্জক গ্রহণ করেছি।আমরা কখনও ভাবিনি কেন আমারা নিজেস্ব ঢংয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও দর্শনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারিনা?

আপনি হয়তে ভাবছেন এটি আমার অন্ধত্ব! নতুবা উ / গ্র জাতীয়তাবাদ! না ভাই, এটাই আত্মপরিচয়ের কান্না। এটাই নিজস্ব বোধ-চেতনা ও সংস্কৃতির মিশিলে বিশ্বদরবারে বড় হয়ে উঠার হৃদয় নিঙ্গড়ানো আকুতি। আমি যৌক্তিকভাবে বিশ্বাস করি- ধার করা সংস্কৃতি ও ভাষা দিয়ে হয়তো বেঁচে থাকা যায় কিন্তু শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়না। পরাশক্তি হয়ে উঠা যায় না।

আমরা হয়তো আগে বুঝতে পারতাম না কোনটায় আমাদের মঙ্গল কোনটাই অমঙ্গল। এখন আমরা বুঝি প/ শ্চি/ মকে প্রশ্নাতীত কোলে তুলে নেওয়াই আমাদের মূল গলদ! আমরা নতুনকরে ভাবতে চাই। অন্য দশটি স্বাধীন সমৃদ্ধশীল জাতির মত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। আমরাও জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও দর্শনে অন্য কোন জাতি থেকে পিছিয়ে থাকতে চাই না।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- সত্য এড়িয়ে যারা কথায় কথায় মিথ্যার সাথে আপোষ করে তারা কখনও জাতির মোড় ফিরাতে পারেনা।

তাই- আরেকটি ভাষা আন্দোলন দরকার। প্রতি একুশে ফেব্রুয়ারিতে শুধু নাচ-গানের আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং শহরে-বন্দরে আবারও প্রভাতফেরি বের করতে হবে এবং তার স্লোগান হবে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ চাই। শুধু সাহিত্যের ভাষা নয়, বাংলা ভাষা হবে বিজ্ঞানের ভাষা, ব্যবহারিক ভাষা- সে আওয়াজও তুলতে হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
৮২ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ চাই-শরিফুল ইসলাম রিয়াদ

আপডেট সময় ১১:৩৪:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ফেব্রুয়ারী জাতীয় মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মুল্যবান আলোচনা ইসলামী ছাত্রলীগ বাংলাদেশ সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন
আফসোস!
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। ইতিহাসে এমন সাহসি জাতি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যারা রক্ত ও জীবন দিয়ে ভাষার অধিকার আদায় করেছে। এ ভাষা আন্দোলন-ই আমাদের স্বাধীনতার সিঁড়ি ছিল।

কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতির একটা মন্দ দিক হলো- রাজনীতিকরা যে সিঁড়িটিকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন, ক্ষমতায় বসার পর সেই সিঁড়িটিকে উপেক্ষা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষার অবস্থায় এখন প্রায় সেরকম।

বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া সত্ত্বেও নিজের দেশেই বাংলাভাষার এখনও দুয়োরানীর অবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্ম, উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা, বিচারকদের রায়, [To-Let,Road Number, Name plate House Number ]- এর মত শব্দের বিচারহীন ব্যবহার- বাংলা ভাষার হাহাকার-ই প্রমাণ করে।

দেখেন- রাষ্ট্র ও আমরা বিনা সংকোচে সাম্রা / জ্যবা/ দীদের চাপিয়ে দেওয়া ভাষাকে সহজ ও বীরত্বব্যঞ্জক গ্রহণ করেছি।আমরা কখনও ভাবিনি কেন আমারা নিজেস্ব ঢংয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও দর্শনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারিনা?

আপনি হয়তে ভাবছেন এটি আমার অন্ধত্ব! নতুবা উ / গ্র জাতীয়তাবাদ! না ভাই, এটাই আত্মপরিচয়ের কান্না। এটাই নিজস্ব বোধ-চেতনা ও সংস্কৃতির মিশিলে বিশ্বদরবারে বড় হয়ে উঠার হৃদয় নিঙ্গড়ানো আকুতি। আমি যৌক্তিকভাবে বিশ্বাস করি- ধার করা সংস্কৃতি ও ভাষা দিয়ে হয়তো বেঁচে থাকা যায় কিন্তু শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়না। পরাশক্তি হয়ে উঠা যায় না।

আমরা হয়তো আগে বুঝতে পারতাম না কোনটায় আমাদের মঙ্গল কোনটাই অমঙ্গল। এখন আমরা বুঝি প/ শ্চি/ মকে প্রশ্নাতীত কোলে তুলে নেওয়াই আমাদের মূল গলদ! আমরা নতুনকরে ভাবতে চাই। অন্য দশটি স্বাধীন সমৃদ্ধশীল জাতির মত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। আমরাও জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও দর্শনে অন্য কোন জাতি থেকে পিছিয়ে থাকতে চাই না।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- সত্য এড়িয়ে যারা কথায় কথায় মিথ্যার সাথে আপোষ করে তারা কখনও জাতির মোড় ফিরাতে পারেনা।

তাই- আরেকটি ভাষা আন্দোলন দরকার। প্রতি একুশে ফেব্রুয়ারিতে শুধু নাচ-গানের আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং শহরে-বন্দরে আবারও প্রভাতফেরি বের করতে হবে এবং তার স্লোগান হবে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ চাই। শুধু সাহিত্যের ভাষা নয়, বাংলা ভাষা হবে বিজ্ঞানের ভাষা, ব্যবহারিক ভাষা- সে আওয়াজও তুলতে হবে।