ঝুঁকিপূর্ণ বক্স কালভার্ট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ধুম-নদীর উপর নির্মিত বক্স কালভার্টটির বেহাল দশা। দুই পাশ ধ্বসে যাওয়ায় এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে এটি আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। এলাকাবাসীর দাবী ওই জায়গায় আর বক্স কালভার্ট নয়, নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হোক। উপজেলার খালিশা চাপানি ইউপি ভবনের ২০০ গজ পশ্চিম ও জামানের চৌপথি-ডালিয়া নতুন বাজার পাকা সড়কের ধুম-নদীর ওপর নির্মিত ওই কালভার্টটি এখন পথচারীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে দুই পাড়ের হাজারো মানুষ। কালভার্টের এক পাশে ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ডালিয়া শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আল-মদিনা মডেল মাদ্রাসা, গোডাউনের হাট, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডালিয়া পওর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়, ডালিয়া নতুন বাজার, বাস স্ট্যান্ড, ডালিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাগলাপীর-ডালিয়া মহাসড়ক এবং অন্য পাশে, মিস্ত্রিপাড়া, কাকিনা, ছোটখাতা গ্রাম। এছাড়া স্থানীয় খেলার মাঠ, মসজিদ, কবরস্থান, মন্দিরসহ হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়, স্কুল-মাদ্রাসা ও একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তাছাড়া গয়াবাড়ী, নাউতারা, ঝুনাগাছ চাপানি, ডিমলা সদর ইউনিয়নেরও কয়েক হাজার মানুষ ওই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে। সম্প্রতি তিস্তা নদীর প্রধান খাল থেকে ইউপি ভবন পর্যন্ত রাস্তাটি নতুন করে কার্পেটিং করায় কালভার্টের উপর দিয়ে যাতায়াতের গুরুত্ব বেড়েছে বহু গুণ।
খালিশা চাপানি ইউপি সদস্য নওশাদ আলী বলেন, গত ৪/৫ বছর পূর্বে বক্স কালভার্টের দুই দিক ধ্বসে গেলেও সরকার এটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে কালভার্টের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। যানবাহন যাতায়াতের ক্ষেত্রে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সবজি বিক্রেতা নূর হোসেন বলেন, ওই কালভার্টের উপর দিয়ে আমরা নিয়মিত যাতায়াত করি। কালভার্টের দুই পাশ ধ্বসে যাওয়ায় যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কোনো দুর্ঘটনার পূর্বেই আমরা ওই জায়গায় নতুন একটি ব্রিজ চাই।
ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র পরিমল চক্রবর্তী বলেন, অটোরিকশা অথবা ভ্যান গাড়ীতে আমরা ভয়ে ভয়ে কালভার্টটি পার হয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় ভ্যান যেতে চায় না তাই হেঁটেও যেতে হয়। এই কালভার্টের জন্য দীর্ঘদিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, জরিনার বাজার, কাকিনা, ডালিয়া নতুন বাজারসহ অন্তত ১০/১২ টি গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব গ্রামের প্রায় ৫-৭ হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্টটি ভেঙ্গে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি ইউনিয়নবাসির দাবী। এ নিয়ে উপজেলায় মাসিক উন্নয়ন সভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি!
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল ইসলাম বলেন, ধুম-নদীর ওই জায়গায় ব্রীজ নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করি চলতি অর্থবছর ব্রিজের কাজ শুরু করতে পারে।