ঢাকা ০১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিমলায় দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে মানুষ সর্বস্বান্ত

মোঃ মামুন ডিমলা (নীলফামারী

নীলফামারী ডিমলায় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সুদে-আসলে জমা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকেই এলাকাছাড়া।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাদন ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন গ্রামে গড়ে উঠেছে নামসর্বস্ব সমিতি। কৃষক-দিনমজুর ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের চেক বন্ধক নিয়ে দাদন দেওয়া এসব সমিতির কাজ। এ ছাড়া কিছু মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন শিক্ষকদের চেক বন্ধক নিয়ে ঋণ দিচ্ছে।

শিক্ষকেরা জানান, এসব চেক দিয়ে টাকা ব্যাংক থেকে তুলত,যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সে জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষক ও চাকরিজীবী ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সুদে চেক বই বন্ধক রেখে টাকা নেন। আর কৃষক, দিনমজুরসহ অন্য পেশার মানুষকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সুদে টাকা দেওয়া হচ্ছে।

সুদের টাকা শোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় নাউতারা পূর্ব পাড়া গ্রামের সহির উদ্দিন এর মেয়ে  লাভলী আক্তার খুশি বলেন,আজ হতে প্রায় ২ বছর পূর্বে আমার বড় ভাই সাংসারিক সমস্যার কারণে  ফাঁকা স্ট্যাম ও সহি করা ২ টি চেক এর পাতা ২০ হাজার বিনিময়ে লিখে নেয়। ১৮ মাসে চক্র বৃদ্ধি হারে সুদ দাড়ায় ২ লক্ষ টাকা। অতঃপর ভাইয়া কুলকিনারা খুঁজে না পেয়ে ২০ শতাংশ জমির মধ্যে ১১শতাংশ জমি লিখে দেয়। আমরা স্ট্যাম ও চেকের পাতা ফিরত চাইলে সে বলে ১১ শতাংশ জমি দিয়ে কি আর শোধ হয়, আরো টাকা দিয়ে হবে, না হলে চেক ডিস অনার করে স্ট্যাম ও চেকের মামলা দিব। অথবা ২৩ শতাংশ জমি লিখে দিতে হবে। জমি লিখে দিতে অস্বীকার করলে,আমার নামে ১০ লক্ষ টাকার মামলা করবে বলে প্রাসই হুমকি থামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে সুদখোর আইনুল মাষ্টার। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লেখিত অভিযোগ করেছি এখনো কোন সুরহা পায়নি। আরো জানতে পেরেছি ৪২০ ধারায় ওই সুদখোর আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুধু আমিই না এই রকম অনেকেই আজ বাড়ি ও সন্তানহারা।তাদের সুদের ভয়ে। এই যখন সমাজের অবস্থা তা দেশ বাসিকে অবহিত করার ব্যাপারে এবং সুদখোরদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনে থানার সামনে প্লে কার্ড নিয়ে ১ ঘন্টা ব্যাপি প্রতিবাদ জানিয়েছি।এতে অংশ নেয় ভক্তভূগী সহ উপজেলার বিভিন্ন পেশার সুশীল সমাজের লোকজন।

ডিমলা থানার ওসি দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, দাদন ব্যবসা বেআইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১১:০২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৬৩ বার পড়া হয়েছে

ডিমলায় দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে মানুষ সর্বস্বান্ত

আপডেট সময় ১১:০২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নীলফামারী ডিমলায় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সুদে-আসলে জমা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকেই এলাকাছাড়া।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাদন ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন গ্রামে গড়ে উঠেছে নামসর্বস্ব সমিতি। কৃষক-দিনমজুর ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের চেক বন্ধক নিয়ে দাদন দেওয়া এসব সমিতির কাজ। এ ছাড়া কিছু মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন শিক্ষকদের চেক বন্ধক নিয়ে ঋণ দিচ্ছে।

শিক্ষকেরা জানান, এসব চেক দিয়ে টাকা ব্যাংক থেকে তুলত,যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সে জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষক ও চাকরিজীবী ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সুদে চেক বই বন্ধক রেখে টাকা নেন। আর কৃষক, দিনমজুরসহ অন্য পেশার মানুষকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সুদে টাকা দেওয়া হচ্ছে।

সুদের টাকা শোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় নাউতারা পূর্ব পাড়া গ্রামের সহির উদ্দিন এর মেয়ে  লাভলী আক্তার খুশি বলেন,আজ হতে প্রায় ২ বছর পূর্বে আমার বড় ভাই সাংসারিক সমস্যার কারণে  ফাঁকা স্ট্যাম ও সহি করা ২ টি চেক এর পাতা ২০ হাজার বিনিময়ে লিখে নেয়। ১৮ মাসে চক্র বৃদ্ধি হারে সুদ দাড়ায় ২ লক্ষ টাকা। অতঃপর ভাইয়া কুলকিনারা খুঁজে না পেয়ে ২০ শতাংশ জমির মধ্যে ১১শতাংশ জমি লিখে দেয়। আমরা স্ট্যাম ও চেকের পাতা ফিরত চাইলে সে বলে ১১ শতাংশ জমি দিয়ে কি আর শোধ হয়, আরো টাকা দিয়ে হবে, না হলে চেক ডিস অনার করে স্ট্যাম ও চেকের মামলা দিব। অথবা ২৩ শতাংশ জমি লিখে দিতে হবে। জমি লিখে দিতে অস্বীকার করলে,আমার নামে ১০ লক্ষ টাকার মামলা করবে বলে প্রাসই হুমকি থামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে সুদখোর আইনুল মাষ্টার। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লেখিত অভিযোগ করেছি এখনো কোন সুরহা পায়নি। আরো জানতে পেরেছি ৪২০ ধারায় ওই সুদখোর আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুধু আমিই না এই রকম অনেকেই আজ বাড়ি ও সন্তানহারা।তাদের সুদের ভয়ে। এই যখন সমাজের অবস্থা তা দেশ বাসিকে অবহিত করার ব্যাপারে এবং সুদখোরদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনে থানার সামনে প্লে কার্ড নিয়ে ১ ঘন্টা ব্যাপি প্রতিবাদ জানিয়েছি।এতে অংশ নেয় ভক্তভূগী সহ উপজেলার বিভিন্ন পেশার সুশীল সমাজের লোকজন।

ডিমলা থানার ওসি দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, দাদন ব্যবসা বেআইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।