ঢাকা ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরে ১টি বেগুন কিনতে হচ্ছে ১০ টাকায়

আঃ আজিজ, বিরামপুর, দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের বিরামপুরে গত বছর ১কেজি বেগুনের দাম ছিল মাত্র ১০টাকা । এ বছর ১ টি বেগুন কিনতেই দাম পড়ছে সেই ১০টাকা। তাই ক্রেতাদের দুই-তিনটি বেগুন কিনে ঘরে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। জানতে চাইলে পৌর শহরের এক বেগুন ক্রেতা সুবর্ণা আক্তার জানান, ‘৩টি বেগুনেই তো ৩০ টাকা নিয়েছে। শীতকালেও রাতের বেলা দেখছি বেগুনের দামে যেন আগুন ধরেছে।’

 

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা সবজি উৎপাদনের জন্য একটি সুপরিচিত এলাকা । এক সপ্তাহ ধরে এখানকার স্থানীয় বাজারগুলোতে বেগুনের দাম বেড়েই চলেছে। আগের বছরগুলোতে শীত মৌসুমে গ্রামীণ বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি হয়েছিল। এ বছর মাঝারি সাইজের ১টি বেগুন ১০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

হোটেল ব্যবসায়ী নজীবর রহমান জানান, ‘বাজারে দিন দিন সবজির দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে। গত বছর শীতকালে ১০০ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম। আর এখন দেড় কেজি ভালো মানের বেগুন কিনতে গেলেই ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। বেগুনের কেজি এখন ৬০ টাকা। দাম বেশি হওয়ায় ৪০ টাকা দিয়ে মাত্র ৪টি বেগুন কিনলাম। এভাবে চলতে থাকলে তো বাড়ির বউ-বাচ্চারা ভবিষ্যতে বেগুনভাজাও খেতে পারবে না।’

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বিরামপুর পৌর শহরে সবজির পাইকারি বাজারে গিয়ে জানা গেল, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে বেগুনের সরবরাহ কম। এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ মণ বেগুন বিক্রি হতো। সেখানে এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০ মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। ৭ দিন আগে প্রতি মণ বেগুন ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই বেগুন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় বেগুন চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের টানা ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে জমিতে বেগুনের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। গাছে ফুল ও বেগুনের জালি নষ্ট হচ্ছে। কোনো কোনো জমিতে বেগুনের গায়ে কালো ছাপ পড়ছে। আবার কোনো কোনো বেগুনগাছ মরেও যাচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকলে বাজারে বেগুনের দাম আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, গত রবি মৌসুমে বিরামপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে ২৬৫ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছিল। চলতি রবি মৌসুমে অন্যান্য সবজির আবাদ বেড়ে যাওয়ায় বেগুনের আবাদ কমেছে। এবার প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছে।

বিরামপুরের মুকুন্দপুর এলাকার বেগুনচাষি , শাহাবুল মন্ডল বলেন, ‘এ বছর আমি আমার দুই বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছি। দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জমি থেকে ১০ থেকে ১৫ মণ বেগুন তুলে পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছি। ঘন কুয়াশার কারণে জমিতে বেগুনের ফুল ও জালি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, উৎপাদনও কমেছে। আজ সকালে দুই বিঘা জমি থেকে মাত্র পৌনে দুই মণ বেগুন তুলতে পেরেছি। পাইকারি বাজারে ২০০০ টাকা মণ দরে বেগুন বিক্রি করলাম।’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:১৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
৪৭ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুরে ১টি বেগুন কিনতে হচ্ছে ১০ টাকায়

আপডেট সময় ০৫:১৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

দিনাজপুরের বিরামপুরে গত বছর ১কেজি বেগুনের দাম ছিল মাত্র ১০টাকা । এ বছর ১ টি বেগুন কিনতেই দাম পড়ছে সেই ১০টাকা। তাই ক্রেতাদের দুই-তিনটি বেগুন কিনে ঘরে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। জানতে চাইলে পৌর শহরের এক বেগুন ক্রেতা সুবর্ণা আক্তার জানান, ‘৩টি বেগুনেই তো ৩০ টাকা নিয়েছে। শীতকালেও রাতের বেলা দেখছি বেগুনের দামে যেন আগুন ধরেছে।’

 

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা সবজি উৎপাদনের জন্য একটি সুপরিচিত এলাকা । এক সপ্তাহ ধরে এখানকার স্থানীয় বাজারগুলোতে বেগুনের দাম বেড়েই চলেছে। আগের বছরগুলোতে শীত মৌসুমে গ্রামীণ বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি হয়েছিল। এ বছর মাঝারি সাইজের ১টি বেগুন ১০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

হোটেল ব্যবসায়ী নজীবর রহমান জানান, ‘বাজারে দিন দিন সবজির দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে। গত বছর শীতকালে ১০০ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম। আর এখন দেড় কেজি ভালো মানের বেগুন কিনতে গেলেই ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। বেগুনের কেজি এখন ৬০ টাকা। দাম বেশি হওয়ায় ৪০ টাকা দিয়ে মাত্র ৪টি বেগুন কিনলাম। এভাবে চলতে থাকলে তো বাড়ির বউ-বাচ্চারা ভবিষ্যতে বেগুনভাজাও খেতে পারবে না।’

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বিরামপুর পৌর শহরে সবজির পাইকারি বাজারে গিয়ে জানা গেল, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে বেগুনের সরবরাহ কম। এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি বাজারে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ মণ বেগুন বিক্রি হতো। সেখানে এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০ মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। ৭ দিন আগে প্রতি মণ বেগুন ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই বেগুন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় বেগুন চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের টানা ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে জমিতে বেগুনের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। গাছে ফুল ও বেগুনের জালি নষ্ট হচ্ছে। কোনো কোনো জমিতে বেগুনের গায়ে কালো ছাপ পড়ছে। আবার কোনো কোনো বেগুনগাছ মরেও যাচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকলে বাজারে বেগুনের দাম আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, গত রবি মৌসুমে বিরামপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে ২৬৫ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছিল। চলতি রবি মৌসুমে অন্যান্য সবজির আবাদ বেড়ে যাওয়ায় বেগুনের আবাদ কমেছে। এবার প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছে।

বিরামপুরের মুকুন্দপুর এলাকার বেগুনচাষি , শাহাবুল মন্ডল বলেন, ‘এ বছর আমি আমার দুই বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছি। দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জমি থেকে ১০ থেকে ১৫ মণ বেগুন তুলে পাইকারি বাজারে বিক্রি করেছি। ঘন কুয়াশার কারণে জমিতে বেগুনের ফুল ও জালি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, উৎপাদনও কমেছে। আজ সকালে দুই বিঘা জমি থেকে মাত্র পৌনে দুই মণ বেগুন তুলতে পেরেছি। পাইকারি বাজারে ২০০০ টাকা মণ দরে বেগুন বিক্রি করলাম।’