নির্বাচনী সহিংসতা নয়, ভাতিজার হাতে চাচা খুন, গ্রেফতার ১
আশুলিয়ায় গলাকেটে ব্যবসায়ী ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার কাজিমুদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন (৩২) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। এসময় তার কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) র্যারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ হত্যাকান্ডের সাথে নির্বাচনী সহিংসতার কোন সম্পর্ক নেই বলেও নিশ্চিত করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী সাভারের মৃত আলী মোহাম্মদ খাঁনের ছেলে মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন ও নিহত কাজিমুদ্দিনের ভাতিজা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যার জানায়, গত ০৭ ফেব্রুয়ারি সকালে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় কাজিমুদ্দিন (৫০) এর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন নামের একজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যার আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত লতিফ নিহতের বড় ভাইয়ের ছেলে। আসামী লতিফের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সে তার চাচাদের সাথে বসবাস করতো। লতিফের পৈত্রিক সম্পত্তি অংশীদারিত্ব নিয়ে নিহত কাজিমুদ্দিনের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিলো। গত ০৬ ফেব্রুয়ারি রাতে নিহত কাজিমুদ্দিনের ডেইরী ফার্মে আসে। পরে মধ্য রাতে আসামী লতিফ তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আসামী লতিফ উত্তেজিত হয়ে রুমে থাকা বটি দিয়ে নিহতের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে রুমের দরজায় তালা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে ০৭ ফেব্রুয়ারি সকালে নিহতের স্ত্রী দরজায় তালা দেখতে পায়। রুমের অপর একটি চাবি নিহতের স্ত্রীর কাছে থাকায় ফার্মের কাজের লোক গরুর ঔষধ নেয়ার জন্য নিহতের স্ত্রীর কাছ থেকে রুমের চাবি নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় নিহতের গলাকাঁটা মরদেহ বিছানার উপর দেখতে পায়। হত্যাকান্ডের এঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আসামী লতিফ আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। পরে গতকাল রাতে আসামী লতিফকে গ্রেফতার করে র্যার-৪।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত নির্বাচনে অন্য প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে তাঁর বাক বিতন্ডা হয়েছিল। এমনকি নির্বাচনে কাজিমুদ্দিনের সমর্থিত প্রার্থী হারার পরে তাকে এ নিয়ে লজ্জা দেয়া হয়েছিল। তাঁর পরিবারের লোকজনও বিষয়টি জানতো। নিহতের স্বজন ও স্থানীয় কিছু ব্যক্তিবর্গ হত্যাকান্ডটিকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বলে ধারণা করে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড বলে খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া তাঁর আপন ভাতিজা এমন হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে এমন কোন ধারণা তাদের ছিলনা। তাই প্রাথমিকভাবে এ হত্যাকান্ডকে নির্বাচনী সহিংসতা মনে করেছিল তাঁর পরিবার।
হত্যাকান্ডের এঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।