ঢাকা ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরামপুরে আর দেখা যায়না গরুর হাল

আঃ আজিজ, বিরামপুর, দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের বিরামপুরে আর দেখা যায়না কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল, হাতে জোড়া গরুর দড়ি,এই ছিল একসময় গ্রামবাংলার চিত্র। ভোর হলেই গ্রামাঞ্চলের কৃষক কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে জমিতে হাল চাষের জন্য বেরিয়ে পড়তেন। বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনেও এসেছে নানা পরিবর্তন। বদলে গেছে তাদের জীবন-যাত্রার মান। আর এই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বিরামপুর উপজেলায়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকেরা গবাদিপশু পালন করতেন হাল চাষের জন্য। আবার কিছু মানুষ নিজের জমিজমা না থাকলেও পেশা হিসেবে গরু দিয়ে হালচাষ করতেন। বিঘাপ্রতি চুক্তি করে অন্যের জমি চাষাবাদ করে নিজের পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেন তারা। কিন্তু বর্তমানে লাঙ্গলের হাল চাষ আর চোখে পড়ে না।

 

বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের কেটরা হাট গ্রামের কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, গরু দিয়ে জমি চাষ করাই আমার পেশা। তবে এখন আর গরুর হাল দিয়ে জমি চাষাবাদ করি না। তিনি আরও বলেন, ছোট বেলায় বাবার সাথে হাল চাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হাল চাষের বলদ থাকত ৩-৪ জোড়া। গরু দিয়ে হাল চাষের অনেক উপকারিতা । লাঙ্গলের ফলা মাটির অনেক গভীরে যায় তাই জমির মাটি ভালো আলগা ও নরম হয়, ধান চাষের জন্য কাঁদাও অনেক ভালো হয়। গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাসও কম হয়। আর ফলনও ভালো হয়। লাঙ্গল দিয়ে প্রতিদিন জমি চাষ করা সম্ভব হতো প্রায় ৩৩ শতাংশ। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে জমি চাষ করার পদ্ধতি এখন বদলে গেছে। নতুন নতুন মেশিনের সাহায্যে কৃষকরা কম সময়ে ও কম খরচে জমি চাষাবাদ করছেন। তাই কালের বিবর্তনে এখন হারিয়ে যেতে বসেছে গরু দিয়ে সেই হাল চাষ।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে জমি চাষাবাদের কাজ। সেই সঙ্গে কৃষকেরা এখন গবাদিপশু পালন না করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। এতে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ প্রায় শেষের পথে। কৃষিতে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন।

 

বিরামপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, বর্তমানে কৃষিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। কৃষি কাজেও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। যে কৃষি জমিতে বছরে দুবার আবাদ করা হতো সেই জমিতে এখন তিন বার আবাদ করা হচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ এখন লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছে। বিরামপুরে বিলুপ্তির পথে এখন গরুর হাল

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪
৫০ বার পড়া হয়েছে

বিরামপুরে আর দেখা যায়না গরুর হাল

আপডেট সময় ০৪:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪

দিনাজপুরের বিরামপুরে আর দেখা যায়না কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল, হাতে জোড়া গরুর দড়ি,এই ছিল একসময় গ্রামবাংলার চিত্র। ভোর হলেই গ্রামাঞ্চলের কৃষক কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে জমিতে হাল চাষের জন্য বেরিয়ে পড়তেন। বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনেও এসেছে নানা পরিবর্তন। বদলে গেছে তাদের জীবন-যাত্রার মান। আর এই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বিরামপুর উপজেলায়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকেরা গবাদিপশু পালন করতেন হাল চাষের জন্য। আবার কিছু মানুষ নিজের জমিজমা না থাকলেও পেশা হিসেবে গরু দিয়ে হালচাষ করতেন। বিঘাপ্রতি চুক্তি করে অন্যের জমি চাষাবাদ করে নিজের পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেন তারা। কিন্তু বর্তমানে লাঙ্গলের হাল চাষ আর চোখে পড়ে না।

 

বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের কেটরা হাট গ্রামের কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, গরু দিয়ে জমি চাষ করাই আমার পেশা। তবে এখন আর গরুর হাল দিয়ে জমি চাষাবাদ করি না। তিনি আরও বলেন, ছোট বেলায় বাবার সাথে হাল চাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হাল চাষের বলদ থাকত ৩-৪ জোড়া। গরু দিয়ে হাল চাষের অনেক উপকারিতা । লাঙ্গলের ফলা মাটির অনেক গভীরে যায় তাই জমির মাটি ভালো আলগা ও নরম হয়, ধান চাষের জন্য কাঁদাও অনেক ভালো হয়। গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাসও কম হয়। আর ফলনও ভালো হয়। লাঙ্গল দিয়ে প্রতিদিন জমি চাষ করা সম্ভব হতো প্রায় ৩৩ শতাংশ। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে জমি চাষ করার পদ্ধতি এখন বদলে গেছে। নতুন নতুন মেশিনের সাহায্যে কৃষকরা কম সময়ে ও কম খরচে জমি চাষাবাদ করছেন। তাই কালের বিবর্তনে এখন হারিয়ে যেতে বসেছে গরু দিয়ে সেই হাল চাষ।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে জমি চাষাবাদের কাজ। সেই সঙ্গে কৃষকেরা এখন গবাদিপশু পালন না করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। এতে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ প্রায় শেষের পথে। কৃষিতে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন।

 

বিরামপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, বর্তমানে কৃষিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। কৃষি কাজেও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। যে কৃষি জমিতে বছরে দুবার আবাদ করা হতো সেই জমিতে এখন তিন বার আবাদ করা হচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ এখন লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছে। বিরামপুরে বিলুপ্তির পথে এখন গরুর হাল