ঢাকা ০৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির

আবদুল্লাহ আল মামুন, নোবিপ্রবি

 

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রবিবার ( ২৬ মে) সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপারগ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.বিপ্লব মল্লিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এই সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়কে কুচক্রী মহলের চক্রান্ত উল্লেখ করে এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

শিক্ষক নেতারা বলেন,এই সর্বজনীন পেনশন বাস্তবায়নের ফলে ১লা জুলাই ২০২৪ তারিখের আগে যোগদানকৃত এবং ১লা জুলাই ২০২৪ এবং তার পরে যোগদানকৃতদের মধ্যে দুটি শ্রেণির জন্ম দেবে। একই কর্মক্ষেত্রে অবস্থানরত সহকর্মীদের মধ্যে এই বিভাজন শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চক্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষে শিক্ষকতা পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করেন।এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে আগামী দিনে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসার আগ্রহ হারাবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়বে এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্র সংকুচিত হবে। রাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির মুখে পড়বে এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।

শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, সরকারের কিছু কুচক্রী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিকে বাধাপ্রদানের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে যার ফলে সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করবে, যা সংবিধানের সমতার নীতির পরিপন্থী।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৫ সালে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হয়েছিল। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিষয়টির সুরাহা হয়। সেই আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের তৎকালীন নেতৃবৃন্দকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল।অদ্যাবধি সে বিষয়টি কার্যকর করা হয়নি। সেটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদানের দাবি দীর্ঘদিনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশা মেধাবীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবি জানায় শিক্ষক নেতারা।সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাতিলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দাবি আদায়ে আগামীতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন সহ কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নেতারা।

উল্লেখ্য,গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ তারিখে অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি প্রজ্ঞাপন (এস.আর.ও নং-৪৭-আইন/২০২৪) জারি করে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা বা তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘প্রত্যয়’ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ১লা জুলাই ২০২৪ এবং তৎপরবর্তী সময়ে যাঁরা চাকরিতে নতুন যোগদান করবেন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৩২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
১৩৯ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির

আপডেট সময় ০৭:৩২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

 

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রবিবার ( ২৬ মে) সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপারগ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.বিপ্লব মল্লিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এই সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়কে কুচক্রী মহলের চক্রান্ত উল্লেখ করে এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

শিক্ষক নেতারা বলেন,এই সর্বজনীন পেনশন বাস্তবায়নের ফলে ১লা জুলাই ২০২৪ তারিখের আগে যোগদানকৃত এবং ১লা জুলাই ২০২৪ এবং তার পরে যোগদানকৃতদের মধ্যে দুটি শ্রেণির জন্ম দেবে। একই কর্মক্ষেত্রে অবস্থানরত সহকর্মীদের মধ্যে এই বিভাজন শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চক্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষে শিক্ষকতা পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করেন।এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে আগামী দিনে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসার আগ্রহ হারাবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়বে এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্র সংকুচিত হবে। রাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির মুখে পড়বে এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।

শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, সরকারের কিছু কুচক্রী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিকে বাধাপ্রদানের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে যার ফলে সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করবে, যা সংবিধানের সমতার নীতির পরিপন্থী।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৫ সালে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হয়েছিল। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিষয়টির সুরাহা হয়। সেই আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের তৎকালীন নেতৃবৃন্দকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল।অদ্যাবধি সে বিষয়টি কার্যকর করা হয়নি। সেটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদানের দাবি দীর্ঘদিনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশা মেধাবীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবি জানায় শিক্ষক নেতারা।সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাতিলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দাবি আদায়ে আগামীতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন সহ কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নেতারা।

উল্লেখ্য,গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ তারিখে অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি প্রজ্ঞাপন (এস.আর.ও নং-৪৭-আইন/২০২৪) জারি করে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা বা তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘প্রত্যয়’ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ১লা জুলাই ২০২৪ এবং তৎপরবর্তী সময়ে যাঁরা চাকরিতে নতুন যোগদান করবেন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য হবে।