ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধ ও জতির জনকের প্রশ্নে স্বাধীন বাংলাদেশে কোন বিভেদ থাকতে পারে না: তারানা হালিম

আরাফাতুল হক চৌধুরী, জবি
অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এমপি বলেছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করলে আওয়ামী লীগকে ছোট করা হয়, একটা পক্ষের এধরনের বিকৃত চিন্তা চেতনার কারণে ইতিপূর্বে মিথ্যা ইতিহাস চর্চা হয়েছে। এই গোষ্ঠী আওয়ামী বিরুদ্ধাচারণ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যা নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করে থাকে,যে কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না এবং জাতির জনক সম্পর্কেও স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না।
সোমবার (২৫ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ‘একাত্তরের গণহত্যা: ইতিহাসের দায় ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এমপি বলেন, জাতির পিতার রাজনৈতিক আদর্শ যদি সমাজে প্রতিফলিত হতো তাহলে আমাদের সমাজে সবাই রাজনীতিবিদই হতে চাইতেন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মাঝে কোনো বিভাজন নেই। এটা থাকা উচিত নয় তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের তুলে ধরতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের প্রতিটি প্রজন্ম প্রকৃত সত্তা খোঁজ করার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, আর আমরা উল্টোটা করছি। আমাদের শিকড় জানতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। আমাদের দাবি তোলা উচিত যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা গণধর্ষণে মত্ত ছিল তাদের একটি তালিকা তৈরী এবং প্রকাশ করতে হবে।
জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধিতা করেছিলেন তারাই রাজনৈতিক অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংখ্যাতাত্ত্বিক অপপ্রচার করে যাচ্ছে। যার কারণেই দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলেও আমরা আন্তর্জাতিক জেনোসাইডের স্বীকৃতি আনতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের জেনোসাইড পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামাজিক ও  সাংস্কৃতিক স্টেকহোল্ডারদেরে এবিষয়ে আরো সক্রিয় হতে হবে এবং জেনোসাইড বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। আর জাতিসংঘ থেকে এখন যদি স্বীকৃতি নাও পাই অন্তত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।
মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জবির ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা জামান ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা আক্তার। অনুষ্ঠান শেষে সবার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের  শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:২২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
১১৮ বার পড়া হয়েছে

মুক্তিযুদ্ধ ও জতির জনকের প্রশ্নে স্বাধীন বাংলাদেশে কোন বিভেদ থাকতে পারে না: তারানা হালিম

আপডেট সময় ১২:২২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এমপি বলেছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করলে আওয়ামী লীগকে ছোট করা হয়, একটা পক্ষের এধরনের বিকৃত চিন্তা চেতনার কারণে ইতিপূর্বে মিথ্যা ইতিহাস চর্চা হয়েছে। এই গোষ্ঠী আওয়ামী বিরুদ্ধাচারণ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যা নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করে থাকে,যে কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না এবং জাতির জনক সম্পর্কেও স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না।
সোমবার (২৫ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে ‘একাত্তরের গণহত্যা: ইতিহাসের দায় ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এমপি বলেন, জাতির পিতার রাজনৈতিক আদর্শ যদি সমাজে প্রতিফলিত হতো তাহলে আমাদের সমাজে সবাই রাজনীতিবিদই হতে চাইতেন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মাঝে কোনো বিভাজন নেই। এটা থাকা উচিত নয় তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের তুলে ধরতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের প্রতিটি প্রজন্ম প্রকৃত সত্তা খোঁজ করার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, আর আমরা উল্টোটা করছি। আমাদের শিকড় জানতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। আমাদের দাবি তোলা উচিত যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা গণধর্ষণে মত্ত ছিল তাদের একটি তালিকা তৈরী এবং প্রকাশ করতে হবে।
জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধিতা করেছিলেন তারাই রাজনৈতিক অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংখ্যাতাত্ত্বিক অপপ্রচার করে যাচ্ছে। যার কারণেই দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলেও আমরা আন্তর্জাতিক জেনোসাইডের স্বীকৃতি আনতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের জেনোসাইড পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামাজিক ও  সাংস্কৃতিক স্টেকহোল্ডারদেরে এবিষয়ে আরো সক্রিয় হতে হবে এবং জেনোসাইড বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। আর জাতিসংঘ থেকে এখন যদি স্বীকৃতি নাও পাই অন্তত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।
মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জবির ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা জামান ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা আক্তার। অনুষ্ঠান শেষে সবার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের  শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।