ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

মাইনুল ইসলাম রাজু, রাবি

এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও হল ত্যাগের হুমকির অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের হল ছাত্রলীগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নবাব আব্দুল লতিফ হলের অতিথি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে গতকাল হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বরাবর এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও আরবী বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. মফিজুর রহমান পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নবাব আব্দুল লতিফ হলের ১০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি এক সময় হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনের অনুসারী ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন।

অভিযোগ মফিজুর রহমান লিখেন, গত ১৮ ডিসেম্বর আমি ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিতে যাওয়ার পথে হল গেইটে ছাত্রলীগ নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাচ্ছি? আমি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি শুনে তিনি আমার রিপোর্ট টা নেন এবং বাবা কি করেন জানতে চান। বাবা রিক্সা চালায় জানার পর তিনি বলেন, বাবা রিক্সা চালায় আর তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কি করে। তখন আমি জানাই আমি একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করছি। এটা শোনার পর তিনি বিদ্রুপ করে বলেন তুই দশজনকে রান্না করে খাওয়াবি। তখন আমি প্রতিবাদ করলে তিনি কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, অমুক নাকি তিন হাজার টাকা পায়।আমার কাছে কেউ টাকা পায় না এটা বললে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আরও লিখেন, এক পর্যায়ে তৌহিদ ও তার কয়েকজন অনুসারি মিলে আমায় গেস্টরুমে নিয়ে যায় এবং পিঠে আঘাত করে। তারপর গালিগালাজ করে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলে এবং ডাক্তারের কাছে যেতে দিচ্ছিল না। এ অবস্থায় আমায় হলের পাহারাদাররা এগিয়ে আসলে তারা আমায় ছেড়ে দেয় । এরপর আমি ডাক্তারের কাছে গেলে তৌহিদ আমায় কল দিয়ে তার কক্ষে দেখা করতে বলে। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এ বিষয়ে হলের গার্ড মো. রতন বলেন, হলের সামনে তর্কাতর্কি দেখে আমি গিয়ে ওদের ছুটিয়ে দিয়েছি, মারতে দিই নি। আর হুমকির বিষয় টা আমি জানি।

অভিযোগের বিষয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, হুমকি দেওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। তারা সাথে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন। মূলত আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেউ করার জন্য এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছেলের সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি সাংগঠনিক সফরে ঢাকায় আছেন। তিনি ফিরে এসে বিষয়টা দেখবেন।

হল প্রাধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে উভয়কেই ডেকে মিমাংসা করে দিয়েছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আর কোন সমস্যা যেন না হয় হল প্রশাসন সেটা খেয়াল রাখবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর হল প্রাধ্যক্ষের সাথে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:১৪:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
২৯৩ বার পড়া হয়েছে

রাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৫:১৪:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর ও হল ত্যাগের হুমকির অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের হল ছাত্রলীগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নবাব আব্দুল লতিফ হলের অতিথি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে গতকাল হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বরাবর এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও আরবী বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. মফিজুর রহমান পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নবাব আব্দুল লতিফ হলের ১০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি এক সময় হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেনের অনুসারী ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন।

অভিযোগ মফিজুর রহমান লিখেন, গত ১৮ ডিসেম্বর আমি ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিতে যাওয়ার পথে হল গেইটে ছাত্রলীগ নেতা তাসকিফ আল তৌহিদের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাচ্ছি? আমি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি শুনে তিনি আমার রিপোর্ট টা নেন এবং বাবা কি করেন জানতে চান। বাবা রিক্সা চালায় জানার পর তিনি বলেন, বাবা রিক্সা চালায় আর তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কি করে। তখন আমি জানাই আমি একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করছি। এটা শোনার পর তিনি বিদ্রুপ করে বলেন তুই দশজনকে রান্না করে খাওয়াবি। তখন আমি প্রতিবাদ করলে তিনি কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, অমুক নাকি তিন হাজার টাকা পায়।আমার কাছে কেউ টাকা পায় না এটা বললে উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আরও লিখেন, এক পর্যায়ে তৌহিদ ও তার কয়েকজন অনুসারি মিলে আমায় গেস্টরুমে নিয়ে যায় এবং পিঠে আঘাত করে। তারপর গালিগালাজ করে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলে এবং ডাক্তারের কাছে যেতে দিচ্ছিল না। এ অবস্থায় আমায় হলের পাহারাদাররা এগিয়ে আসলে তারা আমায় ছেড়ে দেয় । এরপর আমি ডাক্তারের কাছে গেলে তৌহিদ আমায় কল দিয়ে তার কক্ষে দেখা করতে বলে। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এ বিষয়ে হলের গার্ড মো. রতন বলেন, হলের সামনে তর্কাতর্কি দেখে আমি গিয়ে ওদের ছুটিয়ে দিয়েছি, মারতে দিই নি। আর হুমকির বিষয় টা আমি জানি।

অভিযোগের বিষয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, হুমকি দেওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। তারা সাথে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন। মূলত আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেউ করার জন্য এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছেলের সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি সাংগঠনিক সফরে ঢাকায় আছেন। তিনি ফিরে এসে বিষয়টা দেখবেন।

হল প্রাধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে উভয়কেই ডেকে মিমাংসা করে দিয়েছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আর কোন সমস্যা যেন না হয় হল প্রশাসন সেটা খেয়াল রাখবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর হল প্রাধ্যক্ষের সাথে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ।