হাজারো মানুষের চোখের পানির মধ্য দিয়ে সমাপ্তি তাড়াইলের ইজতেমা
গাজায় নির্যাতিত মুসলমানদের শান্তি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের বেলংকার জামিয়াতুল ইসলাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপি ইসলাহী ইজতেমা।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে আখেরি মোনাজাতে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ নেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন, আওলাদে রাসূল, ফিদায়ে মিল্লাত মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী (রহ.) এর খলীফা, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
মোনাজাতে কারও চোখ বন্ধ, কারও দৃষ্টি সুদূরে প্রসারিত। তবে সবার চোখই অশ্রুভেজা। দুই ঠোঁটের ফাঁক গলে শুধু বেরিয়ে আসছিল আমিন-আমিন ধ্বনি। হাজারো মুসল্লির সমবেত সেই ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠেছিল মাঠের চারপাশ। জীবনের সব পাপ, গুনাহ থেকে মুক্তির আশায় মহান আল্লাহর দরবারে দু-হাত তুলে অনুনয়-বিনয় করে কান্না করছিলেন তাঁরা।
মোনাজাতের আগে আগত মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, দুআ’র কোন ভাষা নাই, কান্নাই একমাত্র দুআর ভাষা। দুআ সমস্ত ইবাদতের মূল। দুআ করার সময় শিশুর মতো হাউ-মাউ করে কাঁদবে। যা কিছু চাওয়ার কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে চাইবে। যদি কান্না না আসে তবে কান্নার অভিনয় করে হলেও কাদবে, দুআ’র মধ্যে কান্নার অভিনয় জায়েয আছে। ক্ষমা চাওয়ার মত চাইতে পারলে অবশ্যই আল্লাহ দুআ কবুল করবেন।
নেক এবং এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইহকালে শান্তি, পরকালে মাগফেরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে তিন দিনব্যাপি ইসলাহী ইজতেমায় আরও ইসলাহী বয়ান করেছেন।
ভারতের প্রাচীন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘আমরুহা মাদরাসার’ সদরুল মুদাররিস, আওলাদে রাসূল মাওলানা কারী আফফান মানসুরপুরী দামাত বারাকাতুহুম, জুলফিকার আলী নকশবন্দী আল মুজাদ্দেদী দামাত বারাকাতুহুম এর অন্যতম খলীফা ও দিল্লীর জামি’আ সাইয়্যিদুল মাদারিস এর মুহতামিম শায়েখ আনিস আহমাদ আযাদ বিলগ্রাম (তিনি তাড়াইল ইজতিমায় এবারই প্রথম আগমন করেছেন), হযরত কাসেম নানুতবী (রহ.) এর বংশধর, ইকরা টিভি ও আল খায়ের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা ইমাম কাসেম রশিদ আহমদ।
এছাড়াও বাংলাদেশের হক্কানী আলেমদের মধ্যে নসিহত পেশ করেন, জামিয়া ইসলামিয়া আজমিয়া দারুল উলুম মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, দারুল উলূম দেওবন্দের হাদীস বিভাগের প্রধান মাওলানা আবদুল্লাহ মারুফী, রংপুরের পীর ও জামিয়া কাসিমিয়া দারুল উলুম ধনতোলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা হোসাইন আহমদ, কাকরাইল সার্কিট হাউজ মসজিদের খতীব ও জামিআ ইকরা বাংলাদেশের রঈস মাওলানা আরীফ উদ্দীন মারুফ, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার মহাসচিব ও জামিআ ইকরা বাংলাদেশের সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুর রহীম কাসেমী, হাকীম আখতার রহ. এর খলীফা মুফতি ইবরাহীম শিলাস্থানী, খুলনা মাদানী নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, জামিয়া আশরাফিয়া খাগডহর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা তাজুল ইসলাম কাসেমী, জামিআ ইকরা বাংলাদেশের সিনিয়র মুহাদ্দিস ড. মাওলানা হুসাইনুল বান্না, ইকরা বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল ও জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর নির্বাহী সভাপতি মাওলানা সদরুদ্দিন মাকনুন (জানিশীনে শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ), জামিয়াতুল ইসলাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সাঈদ নিজামী, জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা কাজী সাইফুর রহমান শোয়াইব, তাড়াইল-সাচাইল দারুল হুদা কাছেমুল উলুম মাদ্রাসার মোহতামিম পীরে কামেল মাওলানা ফয়েজ উদ্দীন, মাওলানা জুনায়েদ কাসেমীসহ দেশ বরেণ্য অসংখ্য উলামায়ে কেরাম।