ঢাকা ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্থিরতা ও অরাজকতা চলছে স্বাস্থ্য খাতে

নিজস্ব সংবাদ

স্বাস্থ্য খাতে অচলাবস্থা চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে অভিযুক্তরা এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যে কারণে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিভিন্ন সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের দাবি ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে খাতটিতে তৈরি হয়েছে চরম অস্থিরতা।

বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিয়োগ নিয়ে তৈরি হয় এ অরাজকতা। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনকে অপসারণসহ সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগীদের অব্যাহতি প্রদানের দাবিতে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। দায়িত্ব পাওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে নিয়মিত অফিস করতে পারছেন না ডা. রোবেদ আমিন।

এতে ড্যাব’র কিছু চিকিৎসকের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ড্যাব’র কতিপয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সম্প্রতি ড্যাব বিএসএমএমইউ’র শাখার কার্যক্রমও সাময়িক স্থগিত করা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকেও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের এক সপ্তাহের ওপর হলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি কোনো প্রো-ভিসি।

সব মিলিয়ে চিকিৎসা খাতে তৈরি হয়েছে চরম অস্থিরতা। ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

১৮ই আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালকের পদত্যাগসহ আওয়ামীপন্থি সব কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে অস্থিরতা তৈরি করেন গত ১৫ বছরের বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ডা. রোবেদ আমিনকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক করা হয়।

এতে অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে সম্প্রতি মহাখালীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিক্ষোভকারীদের দাবি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে যত অপকর্ম হয়েছে, এগুলোর সহযোগী ছিলেন ওই কর্মকর্তারা। এদিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের সামনেই তর্কে লিপ্ত হন তারা। একপর্যায়ে হেনস্তার শিকার হন উপদেষ্টা নিজেও।

নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ফটকে নানান দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে চিকিৎসকরা। চিকিৎসা কার্যক্রম বাদ দিয়ে তাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যাওয়ার কারণে রোগীরা স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

একই রকম স্থবিরতা তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউতেও। একদিনের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ভিসিসহ পদত্যাগ করেন ৬ জন শীর্ষ কর্মকর্তা। ফলে কার্যত হাসপাতালটির দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৪২:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪
৩০ বার পড়া হয়েছে

অস্থিরতা ও অরাজকতা চলছে স্বাস্থ্য খাতে

আপডেট সময় ০৫:৪২:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪

স্বাস্থ্য খাতে অচলাবস্থা চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে অভিযুক্তরা এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যে কারণে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের বিভিন্ন সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের দাবি ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে খাতটিতে তৈরি হয়েছে চরম অস্থিরতা।

বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিয়োগ নিয়ে তৈরি হয় এ অরাজকতা। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনকে অপসারণসহ সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগীদের অব্যাহতি প্রদানের দাবিতে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। দায়িত্ব পাওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে নিয়মিত অফিস করতে পারছেন না ডা. রোবেদ আমিন।

এতে ড্যাব’র কিছু চিকিৎসকের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ড্যাব’র কতিপয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সম্প্রতি ড্যাব বিএসএমএমইউ’র শাখার কার্যক্রমও সাময়িক স্থগিত করা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকেও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের এক সপ্তাহের ওপর হলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি কোনো প্রো-ভিসি।

সব মিলিয়ে চিকিৎসা খাতে তৈরি হয়েছে চরম অস্থিরতা। ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

১৮ই আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালকের পদত্যাগসহ আওয়ামীপন্থি সব কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে অস্থিরতা তৈরি করেন গত ১৫ বছরের বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ডা. রোবেদ আমিনকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক করা হয়।

এতে অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে সম্প্রতি মহাখালীতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিক্ষোভকারীদের দাবি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে যত অপকর্ম হয়েছে, এগুলোর সহযোগী ছিলেন ওই কর্মকর্তারা। এদিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের সামনেই তর্কে লিপ্ত হন তারা। একপর্যায়ে হেনস্তার শিকার হন উপদেষ্টা নিজেও।

নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ফটকে নানান দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে চিকিৎসকরা। চিকিৎসা কার্যক্রম বাদ দিয়ে তাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যাওয়ার কারণে রোগীরা স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

একই রকম স্থবিরতা তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউতেও। একদিনের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ভিসিসহ পদত্যাগ করেন ৬ জন শীর্ষ কর্মকর্তা। ফলে কার্যত হাসপাতালটির দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে।