আইনশৃংখলা রক্ষাকারীর কেউ অপরাধ করলে কোন ছাড় নাই: আইজিপি
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, পুলিশ হেফাজতে যদি কারো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে হলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মরদেহের সুরতহাল করা হয়। ডাক্তারের মতামত, পোস্টমর্টেম ও তদন্তের ভিত্তিতে যে তথ্য উঠে আসে সেটি নিয়ে সবসময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সামনেও এ ধরনের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ডাঙ্গারচর নৌ-তদন্ত কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।এখানে রয়েছে বৃহত্তর সমুদ্র বন্দর। সেজন্য বন্দর থানা পুলিশের পাশাপাশি বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে, তারপর ও এরা বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তা নয়, আমি মনে করি, বন্দর এলাকার নিরাপত্তার জন্য বন্দর নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সিএমপির এই ইউনিটের (নৌ পুলিশ) সমন্বয় থাকা দরকার।তাই সকল কিছু বিবেচনা করে বন্দর ও নদীর নিরাপত্তার জন্য এই নৌ-তদন্ত কেন্দ্র ও নৌ-পুলিশ ফলপ্রসূভাবে কাজ করবে ইনশাল্লাহ ।
চট্টগ্রামে সম্প্রতি চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আইজিপি বলেন, আমাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারীর কেউ অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দিচ্ছি না। এমনকি চুরি হওয়া স্বর্ণের ৭০ ভাগ আমরা উদ্ধার করেছি। পুলিশ আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে। তবুও অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ও অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এএসএম মাহাতাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, রাজস্ব বাজেটের আওতায় ডাঙ্গারচর নৌ তদন্ত কেন্দ্রে টাইপ ১ অনুযায়ী ৬ তলা ভিত বিশিস্ট ২ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নৌ কেন্দ্রে ২ জন এসআই (নিরস্ত্র), ২ জন এএসআই (নিরস্ত্র), ২ জন এএসআই সশস্ত্র, ৩০ জন কনস্টেবল, এক জন বাবুর্চি ও একজন পরিচ্ছন্নকর্মীসহ মোট ৩৮ জনবল নিযুক্ত থাকবে।এই নৌ তদন্ত কেন্দ্রের ভূমি বরাদ্দ দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা পর্যন্ত এলাকায় দস্যুতা, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে নৌ-তদন্ত কেন্দ্র তাদের আওতায় থাকা এলাকায় টহলসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
শাহ আমানত সেতু থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত বন্দর চ্যানেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০০২ সালের দিকে নৌ-তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানালে ২০০২ সালে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে কর্ণফুলী উপজেলার ডাঙ্গারচর, রাঙাদিয়া, নগরীর চাক্তাই ও গুপ্তখাল এলাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গায় দুটি করে চারটি নৌ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।২০১৩ সালে নৌ-পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য ডাঙ্গারচরে নদীর কাছে জায়গা বরাদ্দ দেয়। সেখানে দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা পর্যন্ত এলাকায় দস্যুতা, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে কাজ করবে সিএমপি। নৌ-তদন্ত কেন্দ্র তাদের আওতায় থাকা এলাকায় টহলসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।