ইবিতে ‘তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা ২০২৩-২৪ এর আওতায় তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের আয়োজনে এবং তথ্য অধিকার কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যবস্থাপনায় মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের ৪৩৮ নং কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো: আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এম. এঞ্জেলের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য ও এপিএ টিমের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তথ্য অধিকার বক্তবায়ন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম খান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক জনাব তন্ময় সাহা জয় ও মোঃ উজ্জ্বল হোসেন এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য দেন চন্দন কুমার দাস।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আজ দেশের মানুষ অনেক সহজে তথ্য পেতে পারছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন অফিসের সামনে সিটিজেন চার্টার টানানো হয়েছে যাতে মানুষ সহজেই তথ্য জানতে পারে। তবে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের তথ্য চাওয়ার এবং তথ্য পাওয়ার প্রক্রিয়াটা জানতে হবে। আমাদের কাজ হলো কীভাবে শিক্ষার্থীদের তথ্য দিয়ে সমৃদ্ধি করা যায়, কীভাবে আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা এবং আগামীর যে আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে তার সাথে যেনো তাল মিলিয়ে যেতে পারে সেভাবে গ্র্যাজুয়েট তৈরী করা।
সেমিনারে মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম খান তথ্য,সাংবাদিকিতার উৎপত্তি ও বিকাশ,সাংবাদিকতার আইন,তথ্য অধিকার আইন,শুদ্ধাচার কি?নিজের তথ্য সম্পর্কে সচেতনতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা যদি জাতীয় শুদ্ধাচার সম্পর্কে বুঝি তবেই আমরা তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে গনমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে জেনে নিজেকে তৈরি করতে পারবো। আমি যদি আমার চরিত্রটাকে ঠিকভাবে গঠন করে না নিয়ে যেতে পারি তাহলে আমিএ সমাজকে সঠিক মাত্রায় পরিশুদ্ধ করতে পারবো না। আমরা দেশের বিভিন্ন স্থান, জেলা, উপজেলা, ভিন্ন ভিন্ন রীতিনীতি, সংস্কৃতি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে এসেছি। আমরা একে অপরের সঙ্গে সহযোগীতা বজায় রাখবো, দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবো। আমার। আমার পরিবারকে, সমাজকে পরিশুদ্ধ করবো। আমি যখনই আমার পরিবারকে পরিশুদ্ধ করতে পারব ঠিক তখনই আমি আমার দেশকেও পরিশুদ্ধ করতে পারবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, কখনো কখনো তথ্য নিজ থেকে তৈরি করা হয় বিকৃতির জন্য, কিন্তু এই বিকৃতির তথ্যের মাধ্যমে কার যে পক্ষে যায় আর কার যে সর্বনাশ হয় তা বলা মুশকিল। তথ্য নিয়ে সমাজে অনেক কিছু প্রচলিত আছে। তথ্য অধিকার আইন দরকার আর এই আইন তৈরি করতে অবশ্যই গনমাধ্যমের প্রভাব রয়েছে। আইন তৈরি করতেও যেমন গণমাধ্যম ভূমিকা রাখছে এবং আইন তৈরি হওয়ার পর তা প্রয়োজন অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতেও গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা আছে। তথ্য জানা এবং জানানো এই দুইটিকে মিলিয়ে যে আইন তাই-ই তথ্য অধিকার আইন। তথ্যের কাজ হলো নিজে জানা এবং অপরকে জানানো। আজ পৃথিবীতে যতো কাড়াকাড়ি, হানাহানি সবই এই তথ্যকে নিয়ে। যার কাছে যতো তথ্য আছে সে তত ক্ষমতাশালী। এই জিনিসটা পর্যবেক্ষনের ফলে ২০০৯ সাথে তথ্য অধিকার আইন পাশ হয়। এই আইনের মাধ্যমে তথ্য লুকিয়ে রাখার যে প্রবণতা তা ধীরে ধীরে কমে আসছে।