কুকুরের গলায় কোটাধারী প্ল্যাকার্ড: ইবি শিক্ষার্থীদের অভিনব প্রতিবাদ
সরকারি চাকরিতে ৩০% মুক্তিযুদ্ধ কোটার বিপক্ষে দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ফের রাজপথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের পঞ্চম দিনে কুষ্টিয়া খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ইবি শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি বেওয়ারিশ কুকুরের গলায় কোটাধারী প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে অভিনব এক প্রতিবাদ করতে দেখা যায় তাদের।
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা৷ কর্মসূচির একপর্যায়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ সফল করতে অবস্থান নেয়। এসময় দুপাশে প্রায় ৩ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
এদিকে, বাংলা ব্লকেড কর্মসূচী সফল করতে রাজপথে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীরা আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; কোটার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন; সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে; কোটা না মেধা, মেধা মেধা; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক দাবী আদায়ে সচেষ্ট রয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মকে অনগ্রসর বিবেচনা করে যে ৩০% কোটা দেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক। বর্তমানের তুমুল প্রতিযোগিতা মূলক চাকরির বাজারে যেভাবে কোটা সুবিধা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কোটা পদ্ধতি সংস্কার না করা পর্যন্ত আমাদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। তখন তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করলে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।