জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস ঢাকায় দেখতে চাইনা: হেফাজতে ইসলাম
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের (ওএইচসিএইচআর) অফিস খুলতে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এ আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলজুড়ে অজস্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছিল। গুম-খুন ছাড়াও বিশেষত বিডিআর হত্যা, ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরের গণহত্যার পরেও নির্বিঘ্নে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম রাখতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনা। পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে পারেনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।
উল্টো গত বছরের নভেম্বরে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সমস্ত প্রতিবাদ উপেক্ষা করে নিয়োগ দেয়া হয়। তাই এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাগুজে মানবাধিকার সংস্থার অফিস ঢাকায় হোক তা দেশের জনগণ চায় না।
তারা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার পলিসিতে এলজিবিটিকিউ তথা সমকামীদের অধিকারের বিষয়টি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। কিন্তু বাংলাদেশ মুসলিম-অধ্যুষিত রাষ্ট্র হওয়ায় এদেশে সমকামিতা শুধু ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে নিষিদ্ধই নয়, রাষ্ট্রীয় আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনে তাদের নারী-পুরুষ সমানাধিকার ও সর্বজনীন যৌনশিক্ষার ইস্যুগুলো ইসলামের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে খ্রিস্টান রাজ্য বানানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও উদ্বেগের বিষয়। পার্বত্য চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসীরা যে সন্ত্রাসবাদ, অশান্তির দাবানল সৃষ্টি করেছে, তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩৮ হাজার বাঙালি হত্যার দায় ও সব ঘটনার দায় অবশ্যই সন্ত্রাসীদের নিতে হবে।
কিন্তু জাতিসংঘ তাদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সন্ত্রাসীদের পক্ষে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন। ফলে ঢাকায় তাদের অফিস খুলতে দেয়ার সিদ্ধান্ত চরম আত্মঘাতী হবে।
ওদিকে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, মানবাধিকার বা অন্য কোনো ইস্যুতে বিদেশি কোনো সংস্থার সঙ্গে দেশ ও জনগণের স্বার্থ পরিপন্থি কোনো চুক্তি বা সমঝোতা করবে না বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জনগণ প্রত্যাশা করে।
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে কোনোভাবেই বিসর্জন দেয়া যাবে না। এখানে জাতিগত কোনো সংকট নেই। অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের নিজস্ব আইন, বিচারব্যবস্থাসহ প্রশাসনের সকল বিভাগ সক্রিয় রয়েছে।