ঢাকা ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন-মোদির বৈঠক

নিজস্ব সংবাদ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে বাইডেনের বাসভবনে ওই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

এছাড়াও ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোট কোয়াডের এবারের সম্মেলনের আলোচনায় উঠেছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিও। শনিবার উইলমিংটনে কোয়াডের সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার এই তথ্যও নিশ্চিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

রোববার ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই ও দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে অনুষ্ঠিত কোয়াড সম্মেলনের আলোচনার একটি মূল বিষয় ছিল ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিও। বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়ে সেখানে মতামত বিনিময় হয়েছে।

কোয়াড নেতাদের আলোচনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ছিল কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মিশ্রি বলেন, আমি বলেছি, এসব আলোচনা আঞ্চলিক বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্ত। এটা হয়ত একপক্ষ অথবা অন্যপক্ষের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু অঞ্চলের বাইরেও এর তাৎপর্য রয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটে কয়েকটি পরিস্থিতি আলোচনার জন্য এসেছিল। বাংলাদেশও আলোচনায় স্থান পেয়েছে এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে…।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত মাসে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছিলেন।

যদিও সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মোদির সাথে বাইডেনের ফোনালাপে বাংলাদেশের বিষয়ে কোনও তথ্যই উল্লেখ করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মোদি বলেছিলেন, টেলিফোনে আলাপকালে বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও তাদের মাঝে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোদি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বছর কোয়াড জোটের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন তার নিজ শহর উইলমিংটনে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের চার সদস্যের নিরাপত্তা জোট কোয়াডের এবারের নিরাপত্তা সংলাপে অবাধ, উন্মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার নীতি উঠে এসেছে।

চার নেতার বৈঠকের পর প্রকাশিত এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, কোয়াড ভালোর জন্য এক শক্তি এবং আগের চেয়ে আরও কৌশলগতভাবে ঐক্যবদ্ধ। উইলমিংটন ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘‘কোয়াডকে লিডার-লেভেল কাঠামোতে উন্নীত করার চার বছর পর আগের চেয়ে কৌশলগতভাবে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ এই জোট। মঙ্গলের জন্য এক শক্তি; যা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য বাস্তব, ইতিবাচক এবং স্থায়ী প্রভাব বজায় রাখবে।’’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:১৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন-মোদির বৈঠক

আপডেট সময় ০৭:১৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে বাইডেনের বাসভবনে ওই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

এছাড়াও ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোট কোয়াডের এবারের সম্মেলনের আলোচনায় উঠেছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিও। শনিবার উইলমিংটনে কোয়াডের সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার এই তথ্যও নিশ্চিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

রোববার ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই ও দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে অনুষ্ঠিত কোয়াড সম্মেলনের আলোচনার একটি মূল বিষয় ছিল ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিও। বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়ে সেখানে মতামত বিনিময় হয়েছে।

কোয়াড নেতাদের আলোচনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ছিল কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মিশ্রি বলেন, আমি বলেছি, এসব আলোচনা আঞ্চলিক বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্ত। এটা হয়ত একপক্ষ অথবা অন্যপক্ষের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু অঞ্চলের বাইরেও এর তাৎপর্য রয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটে কয়েকটি পরিস্থিতি আলোচনার জন্য এসেছিল। বাংলাদেশও আলোচনায় স্থান পেয়েছে এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে…।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত মাসে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছিলেন।

যদিও সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মোদির সাথে বাইডেনের ফোনালাপে বাংলাদেশের বিষয়ে কোনও তথ্যই উল্লেখ করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মোদি বলেছিলেন, টেলিফোনে আলাপকালে বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও তাদের মাঝে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোদি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বছর কোয়াড জোটের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন তার নিজ শহর উইলমিংটনে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের চার সদস্যের নিরাপত্তা জোট কোয়াডের এবারের নিরাপত্তা সংলাপে অবাধ, উন্মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার নীতি উঠে এসেছে।

চার নেতার বৈঠকের পর প্রকাশিত এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, কোয়াড ভালোর জন্য এক শক্তি এবং আগের চেয়ে আরও কৌশলগতভাবে ঐক্যবদ্ধ। উইলমিংটন ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘‘কোয়াডকে লিডার-লেভেল কাঠামোতে উন্নীত করার চার বছর পর আগের চেয়ে কৌশলগতভাবে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ এই জোট। মঙ্গলের জন্য এক শক্তি; যা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য বাস্তব, ইতিবাচক এবং স্থায়ী প্রভাব বজায় রাখবে।’’