ঢাকা ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীর মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী আটক

মামুনুর রশীদ রাজু, ব্যুরো চিফ

টাঙ্গাইলে গৃহবধূকে ‘হত্যা’, মরদেহ পৌঁছে দিতে গোপালগঞ্জে এসে আটক স্বামী ও শাশুড়ি।

 

সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ তার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। নিহত পপি ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

আটক দুজন- নিহত পপির স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতি গ্রামে।

মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে ‘হত্যা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত পপির স্বজনরা।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে শ্যালক সোহাগকে রায়হান ফোন করে জানান, পপি জ্ঞান হারিয়েছেন। খবর পেয়ে সোহাগ ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মির্জাপুরের উদ্দেশে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে পপি মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। দুপুর ২টার দিকে পপির মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছান। চলে মরদেহ দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। তবে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা। এতে সন্দেহ হলে রায়হান ও তার মা আবেদা খাতুনকে আটক করা হয়। বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের মা রিজিয়া বেগম বলেন, দেড় বছর আগে রায়হান ও পপির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রায়হান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে তারা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাড়া বাসায় পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার জন্য পপিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। পপিকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রায়হান ও তার পরিবারের লোকজন। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের ১৫ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার পপি (২৮) পপি হত্যার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিতে গিয়ে তার বড় ভাই মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে ঘুমের মধ্যে হাতের আঙুল ভেঙে দেওয়া হয়। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। পরে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে। তিনি আরও জানান, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

মির্জাপুর মির্জাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা এখনো মামলা গ্রহণ করিনি। উপরের স্যারদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:০২:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪
৫২ বার পড়া হয়েছে

স্ত্রীর মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী আটক

আপডেট সময় ০৭:০২:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

টাঙ্গাইলে গৃহবধূকে ‘হত্যা’, মরদেহ পৌঁছে দিতে গোপালগঞ্জে এসে আটক স্বামী ও শাশুড়ি।

 

সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ তার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। নিহত পপি ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

আটক দুজন- নিহত পপির স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতি গ্রামে।

মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে ‘হত্যা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত পপির স্বজনরা।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে শ্যালক সোহাগকে রায়হান ফোন করে জানান, পপি জ্ঞান হারিয়েছেন। খবর পেয়ে সোহাগ ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মির্জাপুরের উদ্দেশে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে পপি মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। দুপুর ২টার দিকে পপির মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছান। চলে মরদেহ দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। তবে নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা। এতে সন্দেহ হলে রায়হান ও তার মা আবেদা খাতুনকে আটক করা হয়। বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের মা রিজিয়া বেগম বলেন, দেড় বছর আগে রায়হান ও পপির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রায়হান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে তারা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাড়া বাসায় পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার জন্য পপিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। পপিকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রায়হান ও তার পরিবারের লোকজন। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের ১৫ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার পপি (২৮) পপি হত্যার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিতে গিয়ে তার বড় ভাই মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে ঘুমের মধ্যে হাতের আঙুল ভেঙে দেওয়া হয়। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। পরে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে। তিনি আরও জানান, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

মির্জাপুর মির্জাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, আমরা এখনো মামলা গ্রহণ করিনি। উপরের স্যারদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।