ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা রাজপথে

মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী

রাজশাহী জেলার সমগ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩ ঘটিকায় রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে প্রায় ১২০০ শিক্ষক- শিক্ষিকা মানববন্ধনে অংশ নেন।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনটি পরিচালিত হয়।

অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন এস ইসরাত হামিদ, মো সোহেল রানা , মো হারুন উর রশিদ প্রমুখ সহ রাজশাহী জেলা সহ প্রতিটা উপজেলার ১২০০ শিক্ষক – শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, সুশিক্ষিত জাতি গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা ভিত্তি হিসেবে কাজ করেন। প্রাথমিকের শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগার হিসেবে কাজ করেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা সব থেকে বেশি। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতায় পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডিপ্লোমাধারী নার্স, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে একই যোগ্যতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ৮ম শ্রেণি পাশের একজন গাড়িচালক বেতন পায় ১২তম গ্রেডে। এ থেকে বোঝা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটা অবহেলিত।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফ বলেন, শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করতে হলে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি বাস্তবায়ন আমাদের প্রতি করুণা নয়, এটি আমাদের অধিকার। এ জন্য অনতিবিলম্বে আমাদেরকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি। এ যৌক্তিক দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।

গোদাগাড়ীর শিক্ষিকা ববি মন্ডল বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেডে একজন শিক্ষকদের প্রারম্ভিক বেতন ১১২০০ টাকা, যা একজন শিক্ষকের জীবন যাপনে অপ্রতুল। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে শিক্ষকরা কিভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করবে এবং জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে? শিক্ষকদের জীবন মানের উন্নয়ন দরকার, তবেই জাতি গঠনে এই শিক্ষকরা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। শিক্ষকরা তাদের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে নানা রকম বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে সাবেক স্বৈরশাসক হাসিনা সরকার তাহাদের নানা রকম দাবি প্রেক্ষিতে ১৬তম গ্রেড থেকে ১৩ তম গ্রেড উন্নীত করে। একজন দিনমজুর দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে মাসিক রোজগার করে ১৫,০০০( পনের হাজার টাকা) যেখানে একজন সরকারি শিক্ষক পান মাসে ১১,২০০ টাকা বেতন। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বৈষম্য আগে দূরীকরণ প্রয়োজন । শিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবীদেরকে আকৃষ্ট করতে ১৩ তম গ্রেডে শিক্ষার কোন উন্নতি সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন।

পরে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয় ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ডাক যোগে দেওয়া হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:০১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
৮ বার পড়া হয়েছে

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা রাজপথে

আপডেট সময় ০৮:০১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

রাজশাহী জেলার সমগ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩ ঘটিকায় রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে প্রায় ১২০০ শিক্ষক- শিক্ষিকা মানববন্ধনে অংশ নেন।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনটি পরিচালিত হয়।

অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন এস ইসরাত হামিদ, মো সোহেল রানা , মো হারুন উর রশিদ প্রমুখ সহ রাজশাহী জেলা সহ প্রতিটা উপজেলার ১২০০ শিক্ষক – শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, সুশিক্ষিত জাতি গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা ভিত্তি হিসেবে কাজ করেন। প্রাথমিকের শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগার হিসেবে কাজ করেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা সব থেকে বেশি। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতায় পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডিপ্লোমাধারী নার্স, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে একই যোগ্যতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ৮ম শ্রেণি পাশের একজন গাড়িচালক বেতন পায় ১২তম গ্রেডে। এ থেকে বোঝা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটা অবহেলিত।

সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফ বলেন, শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করতে হলে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি বাস্তবায়ন আমাদের প্রতি করুণা নয়, এটি আমাদের অধিকার। এ জন্য অনতিবিলম্বে আমাদেরকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি। এ যৌক্তিক দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।

গোদাগাড়ীর শিক্ষিকা ববি মন্ডল বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেডে একজন শিক্ষকদের প্রারম্ভিক বেতন ১১২০০ টাকা, যা একজন শিক্ষকের জীবন যাপনে অপ্রতুল। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে শিক্ষকরা কিভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করবে এবং জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে? শিক্ষকদের জীবন মানের উন্নয়ন দরকার, তবেই জাতি গঠনে এই শিক্ষকরা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। শিক্ষকরা তাদের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে নানা রকম বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে সাবেক স্বৈরশাসক হাসিনা সরকার তাহাদের নানা রকম দাবি প্রেক্ষিতে ১৬তম গ্রেড থেকে ১৩ তম গ্রেড উন্নীত করে। একজন দিনমজুর দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে মাসিক রোজগার করে ১৫,০০০( পনের হাজার টাকা) যেখানে একজন সরকারি শিক্ষক পান মাসে ১১,২০০ টাকা বেতন। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বৈষম্য আগে দূরীকরণ প্রয়োজন । শিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবীদেরকে আকৃষ্ট করতে ১৩ তম গ্রেডে শিক্ষার কোন উন্নতি সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন।

পরে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয় ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ডাক যোগে দেওয়া হয়।