১০ দফার প্রস্তাব দিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম
রাষ্ট্র সংস্কারে সেক্টর অনুযায়ী আলাদা আলাদা ১০টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’- শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ দলটির সিনিয়র নেতারা। জামায়াতে ইসলামী জানায়, ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে। তারা দেশকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য সংবিধানসহ সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে।
তারা নিজেদের সুবিধামতো সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে। ২০১১ সালের ৩০শে জুন পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দেয়া হয়। নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধীমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দেয়। হত্যা, গুম এবং মিথ্যা, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা করে জেল-জুলুম ও নির্যাতন চালানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে দেড় সহস্রাধিক প্রাণের বিনিময়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। ৮ই আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো- স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অর্থবহ করার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে না।
জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মূলত তাদের সংস্কার প্রস্তাব ৪১ দফা, সেটা বিস্তারিত। এখন তারা সংক্ষেপে ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য যেগুলো প্রাধান্য দেয়া দরকার, সেগুলো দিয়েছেন। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে বাকিগুলো দেখবে।
১-সংসদবিষয়ক সংস্কার ২-নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার ৩-আইনশৃঙ্খলা সংস্কার ৪-র্যাব-বিষয়ক সংস্কার ৫-জনপ্রশাসন সংস্কার ৬-দুর্নীতি ৭-সংবিধান সংস্কার ৮-শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংস্কার ৯-সংস্কৃতি সংস্কার ১০-পররাষ্ট্রবিষয়ক সংস্কার