ঢাকা ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব

আরাফাতুল হক চৌধুরী, জবি
শুরু হয়ে গেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব। পৌষের সকালের শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে বেদ করে বাহারি রঙের ঘুড়িতে ছেয়ে গেছে পুরো পুরান ঢাকার আকাশ। পরিবারের ছোট-বড় সবাই মিলে মেতেছে সাকরাইন ঘুড়ি উৎসবের আমেজে। 
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে উপেক্ষা করে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাড়ির ছাদ ঘুরে ঘুড়ি উড়ানোর এ দৃশ্য দেখা যায়। সাকরাইন ঘুড়ি উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য হচ্ছে ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা। যা চলবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাকরাইন উপলক্ষে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাসা বাড়ির ছাদ সাজানো হয়েছে বাহারি রঙের আলোকসজ্জায়। সকাল থেকেই  বাজানো হচ্ছে অত্যন্ত উচ্চ স্বরে গান বাজনা। সেই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাথে হালের ডিজে পার্টির আয়োজন। বাড়িতে বাড়িতে চলছে পিঠা তৈরির ধুম। পরিবারের সকল সদস্যরা নতুন পোশাক পরিধান করে উদযাপন করছে ঘুড়ি উৎসব।
অনেক ছাদে পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে বৈচিত্র্যময় খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বিকেলের পরপরই থাকছে চোখ ধাঁধানো আতশবাজির ঝলকানি সাথে ফানুস উড়ানোর চিরায়ত দৃশ্য। সন্ধ্যার পরপরই লাল-নীল বৈচিত্র্য আলোকসজ্জার সাথে আকাশে উড়বে রংবেরঙের শত শত ফানুস।
সকাল থেকেই ধোলাইখাল নিজ বাসার ছাদে ঘুড়ি উড়াচ্ছেন রবিন সহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সবাই নিজেদের ঘুড়ি উড়ানোয় ব্যস্ত। অন্যের ঘুড়ি কাটার জন্য রবিনের মতো চেষ্টা করছেন তারা বাবা, বড় ভাই সহ অন্যান্যরাও। যখনই তাদের মধ্যে কেউ অন্যের ঘুড়ি কাটছেন সকলে হৈ হুল্লোড় করে গানের সাথে নাচানাচি করছেন। আবার তাদের কারো ঘুড়ি কেটে গেলে মন খারাপ না করে দ্রুত ঘুড়ি উড়াতে দেখা যায়। এই ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা চলবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। যদিও এবার অতিরিক্ত শীত এবং কুয়াশা থাকায় অনেকে ঘুড়ি উড়ানো বাদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রবিনের বাবা।
এদিকে গতকাল রাত থেকেই পুরান ঢাকার অলিগলি রূপ নিয়েছে উৎসবের আমেজে। সাকরাইন উপলক্ষে সব বয়সের যুবক-যুবতীরা সেজেগুজে বাহারি অলংকার পরিধান করে সহপাঠীদের নিয়ে যাচ্ছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। অনেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছেন নিজেদের মতো সময় কাটানোর জন্য।
পুরান ঢাকার কলতা বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি  বলেন, সাকরাইন মূলত পৌষ সংক্রান্ত উৎসব। আমাদের বাপদাদাররা পালন করছে এখন আমরাও করছি। সময়ের সাথে সাথে সাকরাইন এখন পুরো পুরান ঢাকার সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছি এখন। বিকেলের পরেই শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পূর্ব। রাতে আমরা  আতশবাজি, ফানুস উড়ানো সহ বারবিকিউ পার্টির সঙ্গে সবাই মিলে নাচানাচি করব এবারের সাকরাইনে।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:১৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪
১৬৫ বার পড়া হয়েছে

মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব

আপডেট সময় ০৩:১৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪
শুরু হয়ে গেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব। পৌষের সকালের শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে বেদ করে বাহারি রঙের ঘুড়িতে ছেয়ে গেছে পুরো পুরান ঢাকার আকাশ। পরিবারের ছোট-বড় সবাই মিলে মেতেছে সাকরাইন ঘুড়ি উৎসবের আমেজে। 
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশকে উপেক্ষা করে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাড়ির ছাদ ঘুরে ঘুড়ি উড়ানোর এ দৃশ্য দেখা যায়। সাকরাইন ঘুড়ি উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য হচ্ছে ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা। যা চলবে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাকরাইন উপলক্ষে পুরান ঢাকার প্রতিটি বাসা বাড়ির ছাদ সাজানো হয়েছে বাহারি রঙের আলোকসজ্জায়। সকাল থেকেই  বাজানো হচ্ছে অত্যন্ত উচ্চ স্বরে গান বাজনা। সেই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাথে হালের ডিজে পার্টির আয়োজন। বাড়িতে বাড়িতে চলছে পিঠা তৈরির ধুম। পরিবারের সকল সদস্যরা নতুন পোশাক পরিধান করে উদযাপন করছে ঘুড়ি উৎসব।
অনেক ছাদে পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে বৈচিত্র্যময় খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বিকেলের পরপরই থাকছে চোখ ধাঁধানো আতশবাজির ঝলকানি সাথে ফানুস উড়ানোর চিরায়ত দৃশ্য। সন্ধ্যার পরপরই লাল-নীল বৈচিত্র্য আলোকসজ্জার সাথে আকাশে উড়বে রংবেরঙের শত শত ফানুস।
সকাল থেকেই ধোলাইখাল নিজ বাসার ছাদে ঘুড়ি উড়াচ্ছেন রবিন সহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সবাই নিজেদের ঘুড়ি উড়ানোয় ব্যস্ত। অন্যের ঘুড়ি কাটার জন্য রবিনের মতো চেষ্টা করছেন তারা বাবা, বড় ভাই সহ অন্যান্যরাও। যখনই তাদের মধ্যে কেউ অন্যের ঘুড়ি কাটছেন সকলে হৈ হুল্লোড় করে গানের সাথে নাচানাচি করছেন। আবার তাদের কারো ঘুড়ি কেটে গেলে মন খারাপ না করে দ্রুত ঘুড়ি উড়াতে দেখা যায়। এই ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা চলবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। যদিও এবার অতিরিক্ত শীত এবং কুয়াশা থাকায় অনেকে ঘুড়ি উড়ানো বাদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রবিনের বাবা।
এদিকে গতকাল রাত থেকেই পুরান ঢাকার অলিগলি রূপ নিয়েছে উৎসবের আমেজে। সাকরাইন উপলক্ষে সব বয়সের যুবক-যুবতীরা সেজেগুজে বাহারি অলংকার পরিধান করে সহপাঠীদের নিয়ে যাচ্ছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। অনেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছেন নিজেদের মতো সময় কাটানোর জন্য।
পুরান ঢাকার কলতা বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি  বলেন, সাকরাইন মূলত পৌষ সংক্রান্ত উৎসব। আমাদের বাপদাদাররা পালন করছে এখন আমরাও করছি। সময়ের সাথে সাথে সাকরাইন এখন পুরো পুরান ঢাকার সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছি এখন। বিকেলের পরেই শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পূর্ব। রাতে আমরা  আতশবাজি, ফানুস উড়ানো সহ বারবিকিউ পার্টির সঙ্গে সবাই মিলে নাচানাচি করব এবারের সাকরাইনে।