ঢাকা ১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভয়ারণ্যের কুহেলিকা উৎসবে শীতবরণে ইবি

ওয়াসিফ আল আবরার, ইবি

কুয়াশাচ্ছন্ন মাঘের শীতকে বরণ করে নিতে দ্বিতীয়বারের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’র উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে ‘কুহেলিকা উৎসব ১৪৩০’। তিন দিনব্যাপী এ উৎসবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনের বটতলায় আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন অভয়ারণ্যের উপদেষ্টা আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল।

 

সাজপসরা, চা ওয়ালী, খাইলেই পটবে, জিভে জল, বই তরুণী, বুক ভিলেজ, হৈ চৈ হেসেল, মুখরোচক, আগে এদিকে আসুন, চিঠিবক্স, দ্যা ফ্লাওয়ারস বি, ফুডিস ডাইন সহ বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৩২টি স্টল নিয়ে চলমান এই কুহেলিকা উৎসবের আকর্ষণ ছিল গ্রাম বাংলার রুদ্রদার পুতুল নাচ, চিঠিবাক্স, পিঠাপুলি ও ঠেলাগাড়ির প্রতি। এসব স্টল ঘুরেঘুরে দর্শনার্থীরা বই, শীতের কাপড় ক্রয়সহ ভিন্ন স্বাদের ঐতিহ্যবাহী ভিন্ন ভিন্ন খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন।

 

কুহেলিকা উৎসবে অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় ছিলো প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে চিঠিবাক্স। ক্যাম্পাসের যেকোনো শিক্ষার্থীর কাছে এই চিঠি পাঠানো যাবে। পছন্দের কারো কাছে চিঠি পাঠাতে হলে তার নাম, বিভাগ ও সেশন চিঠির খামের ওপর লিখে দিয়ে চিঠিবাক্সে ফেলে দিলে অভয়ারণ্যের সদস্যরা সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তির কাছে পৌঁছে যাবে সেই চিঠি।

 

ঘুরতে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরুর পরপরই এমন আয়োজন পেয়ে আমাদের খুবই ভালো লাগছে। আমরা প্রত্যেকটা স্টল ঘুরে দেখেছি, পাটিসাপটা পিঠা, চিকেন মোমো, ফুচকা খেয়েছি। সর্বত্র এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পরের বার চেষ্টা করবো নিজেরাই একটি স্টল নেওয়ার। অভয়ারণ্যের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের এমন আয়োজন উপহার দেওয়ার জন্য।

 

অভয়ারণ্যের সাধারণ সম্পাদক হাশিন ইনতাশাফ অর্প বলেন, সোহান’স কোচিংয়ের সৌজন্যে কুহেলিকা উৎসবে আমরা ৩২ টি স্টল দিতে পারছি। তন্মধ্যে গহনা, ফুসকা, কসমেটিকস, কাঠের গহনা, ফুল ও বইয়ের স্টল রয়েছে। এই উৎসব ক্যাম্পাসের উদ্যাক্তাদের জন্য মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ‘রঞ্জন-১’ যেখানে মৌলিক গান, কবিতা আবৃত্তি, নাচ থাকবে। এই যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক প্রচারণা যেটা পুরো বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিতে জড়িত থাকুক সেটাই কামনা করি।

 

সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এই কুহেলিকা উৎসব সফল করার লক্ষ্যে অভয়ারণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমাদের আয়োজন সুন্দর এবং গুছানো হয়েছে বলে মনে করছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখানে ভিন্নভাবে কিছু উপস্থাপন করলে সর্বোচ্চ সাড়া পাওয়া যায়। আজকে থেকে আগামী দুইদিন এই কুহেলিকা উৎসব চলমান থাকবে।

 

উল্লেখ্য, ‘শান্তি ও সংস্কৃতিতে অভয়ারণ্য’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম করে চলেছে ইবি শিক্ষার্থীদের হাতে গড়া এই সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’। এতে ১৫ জন কার্যনির্বাহী সদস্য এবং ২৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:১৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪
৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

অভয়ারণ্যের কুহেলিকা উৎসবে শীতবরণে ইবি

আপডেট সময় ০৫:১৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪

কুয়াশাচ্ছন্ন মাঘের শীতকে বরণ করে নিতে দ্বিতীয়বারের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’র উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে ‘কুহেলিকা উৎসব ১৪৩০’। তিন দিনব্যাপী এ উৎসবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনের বটতলায় আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন অভয়ারণ্যের উপদেষ্টা আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল।

 

সাজপসরা, চা ওয়ালী, খাইলেই পটবে, জিভে জল, বই তরুণী, বুক ভিলেজ, হৈ চৈ হেসেল, মুখরোচক, আগে এদিকে আসুন, চিঠিবক্স, দ্যা ফ্লাওয়ারস বি, ফুডিস ডাইন সহ বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৩২টি স্টল নিয়ে চলমান এই কুহেলিকা উৎসবের আকর্ষণ ছিল গ্রাম বাংলার রুদ্রদার পুতুল নাচ, চিঠিবাক্স, পিঠাপুলি ও ঠেলাগাড়ির প্রতি। এসব স্টল ঘুরেঘুরে দর্শনার্থীরা বই, শীতের কাপড় ক্রয়সহ ভিন্ন স্বাদের ঐতিহ্যবাহী ভিন্ন ভিন্ন খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন।

 

কুহেলিকা উৎসবে অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় ছিলো প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে চিঠিবাক্স। ক্যাম্পাসের যেকোনো শিক্ষার্থীর কাছে এই চিঠি পাঠানো যাবে। পছন্দের কারো কাছে চিঠি পাঠাতে হলে তার নাম, বিভাগ ও সেশন চিঠির খামের ওপর লিখে দিয়ে চিঠিবাক্সে ফেলে দিলে অভয়ারণ্যের সদস্যরা সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তির কাছে পৌঁছে যাবে সেই চিঠি।

 

ঘুরতে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরুর পরপরই এমন আয়োজন পেয়ে আমাদের খুবই ভালো লাগছে। আমরা প্রত্যেকটা স্টল ঘুরে দেখেছি, পাটিসাপটা পিঠা, চিকেন মোমো, ফুচকা খেয়েছি। সর্বত্র এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পরের বার চেষ্টা করবো নিজেরাই একটি স্টল নেওয়ার। অভয়ারণ্যের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের এমন আয়োজন উপহার দেওয়ার জন্য।

 

অভয়ারণ্যের সাধারণ সম্পাদক হাশিন ইনতাশাফ অর্প বলেন, সোহান’স কোচিংয়ের সৌজন্যে কুহেলিকা উৎসবে আমরা ৩২ টি স্টল দিতে পারছি। তন্মধ্যে গহনা, ফুসকা, কসমেটিকস, কাঠের গহনা, ফুল ও বইয়ের স্টল রয়েছে। এই উৎসব ক্যাম্পাসের উদ্যাক্তাদের জন্য মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ‘রঞ্জন-১’ যেখানে মৌলিক গান, কবিতা আবৃত্তি, নাচ থাকবে। এই যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক প্রচারণা যেটা পুরো বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিতে জড়িত থাকুক সেটাই কামনা করি।

 

সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এই কুহেলিকা উৎসব সফল করার লক্ষ্যে অভয়ারণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমাদের আয়োজন সুন্দর এবং গুছানো হয়েছে বলে মনে করছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখানে ভিন্নভাবে কিছু উপস্থাপন করলে সর্বোচ্চ সাড়া পাওয়া যায়। আজকে থেকে আগামী দুইদিন এই কুহেলিকা উৎসব চলমান থাকবে।

 

উল্লেখ্য, ‘শান্তি ও সংস্কৃতিতে অভয়ারণ্য’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম করে চলেছে ইবি শিক্ষার্থীদের হাতে গড়া এই সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’। এতে ১৫ জন কার্যনির্বাহী সদস্য এবং ২৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে রয়েছে।