ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোপনে ছাত্রলীগ নেত্রীর প্রবেশ: মধ্যরাতে উত্তপ্ত ইবির শেখ হাসিনা হল

ওয়াসিফ আল আবরার, ইবি

পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রী হলে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেত্রী প্রবেশের ঘটনায় মধ্যরাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল। হলের রাজনৈতিক কক্ষে সাবেক নেত্রীর এমন সন্দেহজনক প্রবেশের ঘটনায় আতঙ্কে ভুগছেন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা হলের গেইট খুলে ফোয়ারার সামনে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে স্লোগান শুরু করে। এসময় তারা ‘বহিরাগত হলে এলো, হলবাসী জেগে উঠো; তুমি কে আমি কে? বহিরাগত ছাত্রলীগ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগে সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেত্রী ঝুমা ছদ্মবেশে শেখ হাসিনা হলের দক্ষিণ ব্লকের ২০১ নম্বর রাজনৈতিক কক্ষ থেকে সন্দেহজনক ২টি বস্তা নিয়ে বের করে নিয়ে যান। হলের যেকয়টি কক্ষের কখনো এলটমেন্ট হতো না তার মধ্যে ওই রুমটি অন্যতম। ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার পরিচয় গোপন করে হলে প্রবেশ করার কাজে সাহায্য করেছেন উক্ত কক্ষে অবস্থানরত আরেক ছাত্রী। তিনি আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এশা খাতুন (ছদ্মনাম)।

হলসূত্রে আরও জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্নতা নিরসনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২য় তলার আবাসিক ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে ২০১ নম্বর কক্ষে যায়। এসময় তারা ছাত্রলীগ নেত্রীর হলে প্রবেশের ঘটনা সম্পর্কে এশার কাছে জানতে চাইলে সে কোনোরূপ যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারেনি। একই সাথে এশা স্পষ্টত জানায় তার সাথে যোগাযোগ করেই ঝুমা শেখ হলে এসেছিল। তবে বস্তায় কী ছিল এবং কেন এতদিন পর সাবেক এক ছাত্রী ছদ্মবেশ ধারণ করে হলে এসেছেন সেই বিষয়ে এশা কোন উত্তর দিতে পারেনি। কিন্তু, বস্তার ভেতর অবৈধ কোনো কিছু থাকতে পারে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ রয়েছে বলে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রীরা।

এবিষয়ে অভিযুক্ত এশা (ছদ্মনাম) বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা, কারণ আমি ঝুমা আপুর রুমেই গেস্ট হিসেবে থাকতাম এবং তার বেডেই, আমি হলে আসার আগেই আমার রুমমেট আপুর থেকে আমার নাম্বার নিয়ে ঝুমা আপু আমার সাথে যোগাযোগ করে যে, আমি কবে হলে যাবো। আমি তাকে কোনভাবেই সাহায্য করিনি এমনকি আপু যেদিন হলে আসে আমি ডিপার্টমেন্টের কাজে বাইরে ছিলাম।

তিনি আরো বলেন, ঝুমা (সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী) জিনিসপত্র নেওয়ার সময় হল কতৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি রুমে না থাকায় কীভাবে নেত্রী রুমে ঢুকলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত ছাত্রী জানান তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না।

এনিয়ে হলের অফিসে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এ বিষয়ে কেউ অফিসে ইনফর্ম করেনি এবং আমরা কোনকিছু জানিও না এবং অফিসের তখন কেউ উপস্থিত ছিলো না। শুনেছি হলের আয়ারা জিনিসপত্র নামিয়ে দিতে সাহায্য করেছে।

ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:১৬:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১০৫ বার পড়া হয়েছে

গোপনে ছাত্রলীগ নেত্রীর প্রবেশ: মধ্যরাতে উত্তপ্ত ইবির শেখ হাসিনা হল

আপডেট সময় ০২:১৬:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রী হলে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেত্রী প্রবেশের ঘটনায় মধ্যরাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল। হলের রাজনৈতিক কক্ষে সাবেক নেত্রীর এমন সন্দেহজনক প্রবেশের ঘটনায় আতঙ্কে ভুগছেন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা হলের গেইট খুলে ফোয়ারার সামনে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে স্লোগান শুরু করে। এসময় তারা ‘বহিরাগত হলে এলো, হলবাসী জেগে উঠো; তুমি কে আমি কে? বহিরাগত ছাত্রলীগ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগে সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেত্রী ঝুমা ছদ্মবেশে শেখ হাসিনা হলের দক্ষিণ ব্লকের ২০১ নম্বর রাজনৈতিক কক্ষ থেকে সন্দেহজনক ২টি বস্তা নিয়ে বের করে নিয়ে যান। হলের যেকয়টি কক্ষের কখনো এলটমেন্ট হতো না তার মধ্যে ওই রুমটি অন্যতম। ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার পরিচয় গোপন করে হলে প্রবেশ করার কাজে সাহায্য করেছেন উক্ত কক্ষে অবস্থানরত আরেক ছাত্রী। তিনি আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এশা খাতুন (ছদ্মনাম)।

হলসূত্রে আরও জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্নতা নিরসনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২য় তলার আবাসিক ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে ২০১ নম্বর কক্ষে যায়। এসময় তারা ছাত্রলীগ নেত্রীর হলে প্রবেশের ঘটনা সম্পর্কে এশার কাছে জানতে চাইলে সে কোনোরূপ যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারেনি। একই সাথে এশা স্পষ্টত জানায় তার সাথে যোগাযোগ করেই ঝুমা শেখ হলে এসেছিল। তবে বস্তায় কী ছিল এবং কেন এতদিন পর সাবেক এক ছাত্রী ছদ্মবেশ ধারণ করে হলে এসেছেন সেই বিষয়ে এশা কোন উত্তর দিতে পারেনি। কিন্তু, বস্তার ভেতর অবৈধ কোনো কিছু থাকতে পারে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ রয়েছে বলে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রীরা।

এবিষয়ে অভিযুক্ত এশা (ছদ্মনাম) বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা, কারণ আমি ঝুমা আপুর রুমেই গেস্ট হিসেবে থাকতাম এবং তার বেডেই, আমি হলে আসার আগেই আমার রুমমেট আপুর থেকে আমার নাম্বার নিয়ে ঝুমা আপু আমার সাথে যোগাযোগ করে যে, আমি কবে হলে যাবো। আমি তাকে কোনভাবেই সাহায্য করিনি এমনকি আপু যেদিন হলে আসে আমি ডিপার্টমেন্টের কাজে বাইরে ছিলাম।

তিনি আরো বলেন, ঝুমা (সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী) জিনিসপত্র নেওয়ার সময় হল কতৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি রুমে না থাকায় কীভাবে নেত্রী রুমে ঢুকলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত ছাত্রী জানান তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না।

এনিয়ে হলের অফিসে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এ বিষয়ে কেউ অফিসে ইনফর্ম করেনি এবং আমরা কোনকিছু জানিও না এবং অফিসের তখন কেউ উপস্থিত ছিলো না। শুনেছি হলের আয়ারা জিনিসপত্র নামিয়ে দিতে সাহায্য করেছে।

ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।