ঢাকা ১১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এই ঈদেও স্বপ্ন যায়নি তাদের বাড়ি

ওয়াসিফ আল আবরার, ইবি

ঈদে সবাই চায় তার পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে। সেজন্যই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা হয় সবার। কিন্তু ফেরা হচ্ছে না তাদেরই শুধু। কাঁধে রয়েছে গুরুদায়িত্বের ভার। সার্বক্ষণিক দায়িত্ব কাঁধে ক্যাম্পাসকে আগলে রাখছেন তারা। সারাবছর একই পোষাকে ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তার চাদরে সযত্নে ঢেকে রাখা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আনসার সদস্যদের স্বপ্ন বাড়ি যায়নি এবারের ঈদেও।

লম্বা ৪০ দিনের ঈদের ছুটিতে বিদায় নিয়েছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। একে একে বন্ধ হয়েছে অফিস, আবাসিক হল সমূহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই ফিরে গিয়েছে নাড়ীর টানে, বাড়ির পথে পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। কিন্তু এই মানুষ গুলোর বাড়ি যাওয়া আর হলো কই?? কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল। ঈদের ছুটিতে শূন্য ক্যাম্পাস তাদের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।

সকলের স্বপ্ন বাড়ি ফিরলেও, এরা যেন দায়িত্বের কারণে, নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তার খাতিরে এমন স্বপ্ন দেখা ভুলেই গিয়েছেন।এদের প্রিয়জন ঘিরে সযত্নে গড়ে উঠা আবেগ, অনূভুতি গুলো দায়বদ্ধতার ঘূর্ণিপাকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। সকলেই যেখানে ছুটি উপভোগের নানা উপায় খুঁজে সেখানে তারা খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বিশেষ দিনগুলোতেও ডিউটি করে যাচ্ছেন হাসিমুখে। এদের দায়িত্বের শেকলে বাঁধা কর্মব্যস্ত জীবনে যেন কর্মবিরতির সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সেল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটিকালীন সময়ে মোট ৮৮ জন আনসার সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে ইদের ছুটি পাননি কেউ-ই। যারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তারা হয়তো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে না ফলে সহকর্মীদের সাথেই কাটবে তাদের এবারের ঈদ। নিজ পরিবারের বাহিরে থাকা এসব সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গড়ে তুলেন আরেকটি পরিবার। যেটা রক্তের নয় আত্মার বাঁধন।

আনসার সদস্য রহমান (ছদ্মনাম) বলেন, সবার ই মন চায় পরিবারের সাথে ঈদ কাটাতে। সব দুঃখ-কষ্ট মাটি চাপা দিয়ে পরিবারের জন্য টাকা ইনকাম করতে আসছি শত কিলোমিটার দূরে। কিন্তু দেখেন? সেই পরিবার ছেড়েই ঈদ করতে হচ্ছে আমাদের। ঈদে বাড়ি যাওয়া না হওয়ায় গত কয়েক বছর যাবত পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারি না।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব তো অবশ্যই পালন করতেই হবে। এমনিতে ঈদের পর গিয়ে দেখা করি সবার সাথে। কিন্তু তাতে কি আর ঈদের আনন্দ পাওয়া যায়? আমাগো কি পরিবারের সাথে ঈদ করতে ইচ্ছা করে না? কিন্তু ডিউটি দিবে কে তখন।’

নিরাপত্তার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সিকিউরিটি ইনচার্জ মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এখন এই ছুটিতে ৮৮ জন আনসার সদস্য কর্মরত আছেন। ক্যাম্পাস যতদিন ছুটিতে থাকবে আমাদের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি রাখবো না ইনশাআল্লাহ৷

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
৬৪ বার পড়া হয়েছে

এই ঈদেও স্বপ্ন যায়নি তাদের বাড়ি

আপডেট সময় ১২:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

ঈদে সবাই চায় তার পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে। সেজন্যই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা হয় সবার। কিন্তু ফেরা হচ্ছে না তাদেরই শুধু। কাঁধে রয়েছে গুরুদায়িত্বের ভার। সার্বক্ষণিক দায়িত্ব কাঁধে ক্যাম্পাসকে আগলে রাখছেন তারা। সারাবছর একই পোষাকে ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তার চাদরে সযত্নে ঢেকে রাখা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আনসার সদস্যদের স্বপ্ন বাড়ি যায়নি এবারের ঈদেও।

লম্বা ৪০ দিনের ঈদের ছুটিতে বিদায় নিয়েছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। একে একে বন্ধ হয়েছে অফিস, আবাসিক হল সমূহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই ফিরে গিয়েছে নাড়ীর টানে, বাড়ির পথে পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। কিন্তু এই মানুষ গুলোর বাড়ি যাওয়া আর হলো কই?? কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল। ঈদের ছুটিতে শূন্য ক্যাম্পাস তাদের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।

সকলের স্বপ্ন বাড়ি ফিরলেও, এরা যেন দায়িত্বের কারণে, নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তার খাতিরে এমন স্বপ্ন দেখা ভুলেই গিয়েছেন।এদের প্রিয়জন ঘিরে সযত্নে গড়ে উঠা আবেগ, অনূভুতি গুলো দায়বদ্ধতার ঘূর্ণিপাকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। সকলেই যেখানে ছুটি উপভোগের নানা উপায় খুঁজে সেখানে তারা খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বিশেষ দিনগুলোতেও ডিউটি করে যাচ্ছেন হাসিমুখে। এদের দায়িত্বের শেকলে বাঁধা কর্মব্যস্ত জীবনে যেন কর্মবিরতির সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সেল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটিকালীন সময়ে মোট ৮৮ জন আনসার সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে ইদের ছুটি পাননি কেউ-ই। যারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তারা হয়তো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে না ফলে সহকর্মীদের সাথেই কাটবে তাদের এবারের ঈদ। নিজ পরিবারের বাহিরে থাকা এসব সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গড়ে তুলেন আরেকটি পরিবার। যেটা রক্তের নয় আত্মার বাঁধন।

আনসার সদস্য রহমান (ছদ্মনাম) বলেন, সবার ই মন চায় পরিবারের সাথে ঈদ কাটাতে। সব দুঃখ-কষ্ট মাটি চাপা দিয়ে পরিবারের জন্য টাকা ইনকাম করতে আসছি শত কিলোমিটার দূরে। কিন্তু দেখেন? সেই পরিবার ছেড়েই ঈদ করতে হচ্ছে আমাদের। ঈদে বাড়ি যাওয়া না হওয়ায় গত কয়েক বছর যাবত পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারি না।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব তো অবশ্যই পালন করতেই হবে। এমনিতে ঈদের পর গিয়ে দেখা করি সবার সাথে। কিন্তু তাতে কি আর ঈদের আনন্দ পাওয়া যায়? আমাগো কি পরিবারের সাথে ঈদ করতে ইচ্ছা করে না? কিন্তু ডিউটি দিবে কে তখন।’

নিরাপত্তার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সিকিউরিটি ইনচার্জ মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এখন এই ছুটিতে ৮৮ জন আনসার সদস্য কর্মরত আছেন। ক্যাম্পাস যতদিন ছুটিতে থাকবে আমাদের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি রাখবো না ইনশাআল্লাহ৷