ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভুল চিকিৎসা রোগীর মৃত্যুর পর লাশ আইসিইউতে নিয়ে বেঁচে আছে বলে আশ্বাস

হাসান আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডস্থ প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ভুল চিকিৎসা রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর পর লাশ আইসিইউতে নিয়ে বেঁচে আছে বলে আশ্বাস দিয়ে ৫২ হাজার টাকা বিল করার অভিযোগ স্বজনদের। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে রোগী মারা গেলেও স্বজনদের জানানো হয় বিকেল ৪ টায়। এতে নিহতের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হসপিটালে হট্টগোল করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

নিহতের নাম সালমা হোসেন (৪২)। তিনি ফতুল্লার ইজদাইর বাজার এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী।

নিহতের বড় বোন হোসনে আরা ইসলাম জানান, পেট ব্যথার কারণে সালমাকে ২৭ মার্চ দুপুরে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এর সারা রাত সে ভাল ছিল। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। ভোরে তাকে একটি ইনসেকশন দেওয়ার পর অবস্থা খারাপ হয়। তখন তাড়াহুড়া করে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যায়। ভাল রোগীকে আইসিইউতে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলা হয় রোগী কোমায় চলে গেছে। আইসিইউতে রাখলে ঠিক হয়ে যাবে। সকাল ৮ টার দিকে বোনের শরীরে হাত দিয়ে দেখি বরফের মত ঠান্ডা। চেহারা কালো হয়ে গেছে। আমার বোন মারা গেছে বলার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় চিন্তার কোন কারণ নেই রোগী বেঁচে আছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবস্থাপত্রে যে ডাক্তারের নাম উল্লেখ রয়েছে তিনি রোগীর চিকিৎসা করেননি। চিকিৎসা করেছেন অন্য একজন। যিনি চিকিৎসা করেছেন তিনি ডাক্তার না।

নিহতের ভাই আতাউর রহমান বলেন, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে হাসপাতালে আসি। তখনো আমাদের বলা হয়নি রোগী মারা গেছে। পরে ৯৯৯ নম্বারে ফোন করলে পুলিশ আসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে রোগী মারা গেছে। রোগী সকালে মারা গেলেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে দিনভর আইসিইউতে রেখে ৫২ হাজার টাকা বিল করেছে। ব্যবসা করার জন্য তারা ভুল ইনজেকশন দিয়ে রোগীকে মেরে আইসিইউতে নিয়েছে।

হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক একে.এম ফেরদৌস রহমানের তত্ত্বাবধানে রোগীর চিকিৎসা চলছিল। সকালেও তিনি রোগী দেখে গেছেন। দুপুর ২ টা ৪৯ মিনিটে ৫ নম্বর আইসিইউতে চিকিৎসাধিন অবস্থা রোগীর মৃত্যু হয়। ডাক্তার ফেরদৌস রহমানের মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি দেননি। তিনি চলে যাওয়ার পর কে চিকিৎসা করেছে জানতে চাইলে তার নাম না বলে জানান নিহতের স্বজনদের সঙ্গে সামাধান হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলি। মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে চাইলে স্বজনরা রাজি হয়নি। তারা লিখিত অভিযোগও করতে ইচ্ছুক নয়। মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই মর্মে নিহতের স্বামী ফারুক হোসেন লিখিত দিয়ে সাড়ে ৫ টার দিকে লাশ নিয়ে গেছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০১:৪৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ বার পড়া হয়েছে

ভুল চিকিৎসা রোগীর মৃত্যুর পর লাশ আইসিইউতে নিয়ে বেঁচে আছে বলে আশ্বাস

আপডেট সময় ০১:৪৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডস্থ প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ভুল চিকিৎসা রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর পর লাশ আইসিইউতে নিয়ে বেঁচে আছে বলে আশ্বাস দিয়ে ৫২ হাজার টাকা বিল করার অভিযোগ স্বজনদের। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে রোগী মারা গেলেও স্বজনদের জানানো হয় বিকেল ৪ টায়। এতে নিহতের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হসপিটালে হট্টগোল করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

নিহতের নাম সালমা হোসেন (৪২)। তিনি ফতুল্লার ইজদাইর বাজার এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী।

নিহতের বড় বোন হোসনে আরা ইসলাম জানান, পেট ব্যথার কারণে সালমাকে ২৭ মার্চ দুপুরে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এর সারা রাত সে ভাল ছিল। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। ভোরে তাকে একটি ইনসেকশন দেওয়ার পর অবস্থা খারাপ হয়। তখন তাড়াহুড়া করে তাকে আইসিইউতে নিয়ে যায়। ভাল রোগীকে আইসিইউতে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলা হয় রোগী কোমায় চলে গেছে। আইসিইউতে রাখলে ঠিক হয়ে যাবে। সকাল ৮ টার দিকে বোনের শরীরে হাত দিয়ে দেখি বরফের মত ঠান্ডা। চেহারা কালো হয়ে গেছে। আমার বোন মারা গেছে বলার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় চিন্তার কোন কারণ নেই রোগী বেঁচে আছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবস্থাপত্রে যে ডাক্তারের নাম উল্লেখ রয়েছে তিনি রোগীর চিকিৎসা করেননি। চিকিৎসা করেছেন অন্য একজন। যিনি চিকিৎসা করেছেন তিনি ডাক্তার না।

নিহতের ভাই আতাউর রহমান বলেন, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে হাসপাতালে আসি। তখনো আমাদের বলা হয়নি রোগী মারা গেছে। পরে ৯৯৯ নম্বারে ফোন করলে পুলিশ আসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে রোগী মারা গেছে। রোগী সকালে মারা গেলেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে দিনভর আইসিইউতে রেখে ৫২ হাজার টাকা বিল করেছে। ব্যবসা করার জন্য তারা ভুল ইনজেকশন দিয়ে রোগীকে মেরে আইসিইউতে নিয়েছে।

হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক একে.এম ফেরদৌস রহমানের তত্ত্বাবধানে রোগীর চিকিৎসা চলছিল। সকালেও তিনি রোগী দেখে গেছেন। দুপুর ২ টা ৪৯ মিনিটে ৫ নম্বর আইসিইউতে চিকিৎসাধিন অবস্থা রোগীর মৃত্যু হয়। ডাক্তার ফেরদৌস রহমানের মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি দেননি। তিনি চলে যাওয়ার পর কে চিকিৎসা করেছে জানতে চাইলে তার নাম না বলে জানান নিহতের স্বজনদের সঙ্গে সামাধান হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলি। মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে চাইলে স্বজনরা রাজি হয়নি। তারা লিখিত অভিযোগও করতে ইচ্ছুক নয়। মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই মর্মে নিহতের স্বামী ফারুক হোসেন লিখিত দিয়ে সাড়ে ৫ টার দিকে লাশ নিয়ে গেছেন।